ইম্ফল: মণিপুর হিংসা নিয়ে আলোচনার দাবিতে প্রায় অচল সংসদীয় কার্যক্রম। কিন্তু, মণিপুর আছে মণিপুরেই। হিংসা কিছুতেই থামছে না। ইম্ফল পশ্চিম জেলায় জনতা সঙ্গে সংঘর্ষে আরও এক পুলিশ অফিসারের মৃত্যুর খবর এসেছে। পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার (৩ অগস্ট) বিষ্ণুপুরে জেলায় কমপক্ষে দুটি নিরাপত্তা চৌকি থেকে স্বয়ংক্রিয় বন্দুক-সহ প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ লুঠ করে নিয়ে গিয়েছে উন্মত্ত জনতা। মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, রাজ্যের পরিস্থিতি এখনও ‘অস্থির এবং উত্তেজনাপূর্ণ’। রাজ্য জুড়ে চলছে ‘গুলিবর্ষণের ঘটনা এবং অশান্ত জমায়েত’।
মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, বিষ্ণুপুর জেলার কেইরেনফাবি এবং থাঙ্গালাওয়াইয়ে অবস্থিত মণিপুর সশস্ত্র পুলিশের দ্বিতীয় ব্যাটালিয়নের দুটি ফাঁড়ি থেকে অস্ত্রশস্ত্র লুঠ করা হয়েছে। হেইনগাং এবং সিংজামেই থানা থেকেও অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ লুঠ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতায় সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। কাউতরুক, হারাওথেল এবং সেনজাম চিরাং এলাকায় দুই পক্ষের গোলাগুলির মধ্যে পড়ে নিহত হন এক পুলিশ অফিসার। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও দুইজন।
নিহত পুলিশ অফিসারের মাথায় গুলি লেগেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে নিকটবর্তী পার্বত্য এলাকা থেকে স্নাইপার রাইফেল থেকে গুলি চালিয়েছে জঙ্গিরা। কাউতরুক এবং সেনজাম চিরাং-এ গুলিযুদ্ধে একজন গ্রাম স্বেচ্ছাসেবকও আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই, বিশেষ করে বিষ্ণুপুর জেলায় প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর চলাচলে বাধা দিতে রাস্তায় নেমে এসেছিল হাজার হাজার স্থানীয় বাসিন্দা। ফুগাকচাও ইখাই এলাকায় প্রায় ৫০০-৬০০ মানুষের জমায়েত হয়। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়তে হয় পুলিশকে। এই ঘটনায় ২৫ জন মতো আহত হয়েছেন।
তবে, উপদ্রুত এলাকাগুলিতে শান্তি ফেরাতে বিশাল সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কাউওতরু পাহাড়ি এলাকায় যৌথ নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে সাতটি অবৈধ বাঙ্কার ধ্বংস করা হয়েছে। মণিপুরের পার্বত্য ও উপত্যকা এলাকার জেলাগুলিতে মোট ১২৯টি চেকপয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আইনভঙ্গের দায়ে প্রায় ১,০৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে। জনসাধারণকে গুজবে কান না দেওয়ার এবং ইন্টারনেটে প্রচারিত ভুয়ো ভিডিয়ো সম্পর্কে সচেতন থাকার জন্য আবেদন করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। লুঠ করা অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। আর সাধারণ মানুষ অপেক্ষা করছেন, কবে এই আগুন নিভবে?