চন্ডীগঢ় : হিন্দু বিবাহ আইন সংক্রান্ত বিষয়ে বড় সিদ্ধান্ত জানাল পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট। যদি কোনও মেয়ের ১৮ বছরের আগে বিয়ে হয়ে যায় এবং প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যাওয়ার পরেও যদি তাঁর বিয়ে বাতিল না হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে তিনি বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য ডিভোর্সের ডিক্রি দিতে পারেন।
আজ পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের বিচারপতি রিতু বাহরি এবং অরুং মোঙ্গার ডিভিশন বেঞ্চে আজ এই নির্দেশ দিয়েছে। হাইকোর্ট আরও জানিয়েছে, যদি এই ধরনের বিবাহ (১৮ বছরের আগে বিয়ে হওয়ার পরেও যাঁদের বিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বাতিল হয়নি) হিন্দু বিবাহ আইনের ১৩(২)(iv) ধারায় অগ্রাহ্য করা যাবে না। কারণ, আইনের ওই ধারায় বলা হয়েছে, যাঁদের বিয়ে ১৫ বছরের আগে বাতিল হয়ে গিয়েছে, একমাত্র তাঁদের ক্ষেত্রেই এই নিয়ম কার্যকর হবে।
হাইকোর্টে যে মামলাটি এসেছিল, তাতে বিয়ের সময় স্বামীর বয়স ছিল ২৩ এবং স্ত্রীর বয়স ছিল ১৭। তাঁরা একই ছাদের তলায় বৈবাহিক জীবন কাটিয়েছেন প্রায় ১১ বছর। একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে।
এখন ১১ বছর বৈবাহিক জীবন কাটানোর পর ওই দম্পতি হিন্দু বিবাহ আইন, ১৯৫৫-র ১৩(বি) ধারায় যৌথভাবে এক পিটিশন জমা করেছেন। তাঁরা এখন পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেছেন নিম্ন আদালতে। কিন্তু সেই আবেদন নাকচ করে দেয় নিম্ন আদালত। নিম্ন আদালতের যুক্তি ছিল, যেহেতু বিয়ের সময় ওই মহিলার বয়স ১৮ বছরের কম ছিল, তাই সেই বিবাহ গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং, ওই দম্পতির বিবাহ বাতিল করতে হবে হিন্দু বিবাহ আইনের ১৩(২)(iv) ধারায়।
পরে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট জানায়, নিম্ন আদালতের এই রায় বর্তমান মামলাটির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যদি ১৫ বছর বয়সে কোনও মেয়ের বিয়ে হয়, তাহলেই এই নিয়ম কার্যকর হয়।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই রাজস্থান বিধানসভায় ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে বাধ্যতামূলক বিবাহ নথিভুক্তিকরণ (সংশোধনী) বিল, ২০২১ পাশ হয়েছে। এই বিলে বলা হয়েছে, কোও নাবালিকার বিয়ের ৩০ দিনের মধ্যে বিয়ের যাবতীয় নথি অভিভাবককে সরকারের কাছে জমা করতে হবে।
বিলে উল্লেখ রয়েছে, রাজস্থানের যে কোনও প্রান্তে স্বামী–স্ত্রী ৩০ দিনের বেশি সময় ধরে যদি একসঙ্গে থাকেন, তাহলে তাঁরা স্থানীয় বিবাহ নথিভুক্তিকরণ কার্যালয়ে গিয়ে বিয়ের রেজিস্ট্রি করার আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এই বিলের পরবর্তী অংশ নিয়ে। সেখানে বলা হচ্ছে, যদি পাত্রের বয়স ২১ কিংবা পাত্রীর বয়স ১৮ বছরের কম হয়, তাহলেও বিয়ে সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য অভিভাবককে ৩০ দিনের মধ্যে অবশ্যই জমা করতে হবে নিকটবর্তী ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন অফিসে। আর এই দ্বিতীয় অংশ নিয়েই শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা।
আরও পড়ুন: Child Marriage: ‘বাল্য বিবাহে’ সায় দিচ্ছে অশোক গেহলটের সরকার? কী রয়েছে সংশোধনী বিলে