ভোপাল: ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, মঙ্গলবার সকালেও নেভেনি সতপুরা ভবনের (Satpura Bhavan) আগুন। দাউদাউ করে জ্বলছে মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের (Bhopal) একেবারে প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সতপুরা ভবন। ওই একটি বহুতলেই রয়েছে একাধিক সরকারি অফিস। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আগুন নেভাতে সোমবার রাতেই কেন্দ্রের সাহায্য চেয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান (Madhya Pradesh CM)। তারপর রাতেই নামানো হয় সেনা। বায়ুসেনার বিমানে করে উপর থেকে জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু, সারারাতের চেষ্টার পরেও মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জ্বলছে সতপুরা ভবন।
সতপুরা ভবনের বিধ্বংসী আগুন নেভাতে সোমবার রাতে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান সরাসরি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে ফোন করে সাহায্যের আবেদন জানান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও ফোন করে ঘটনার কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। তারপর প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে রাতেই আগুন নেভাতে বায়ুসেনার বিশেষ বিমান AN-32 ও মিগ ১৫ কপ্টার নামানো হয়। আগুন নেভানোর কাজের জন্য সারারাত ভোপাল বিমানবন্দরও খোলা ছিল। কিন্তু, মঙ্গলবার ভোর ৫টা পর্যন্ত আগুন নেভেনি। তবে এই অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের কোনও খবর নেই।
জানা গিয়েছে, সোমবার বিকাল ৪টে নাগাদ সতপুরা ভবনের তৃতীয় তলে আদিবাসী কল্যাণ দফতরের অফিসে প্রথমে আগুন লাগে। সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় দমকল বাহিনীতে। কিন্তু, দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছনোর আগেই দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র তৃতীয় তলে। এসি এবং ক্যান্টিনে রান্নার জন্য রাখা গ্যাস সিলিন্ডার আগুনে সংস্পর্শে আসায় বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণও হয়। তারপর ক্রমশ আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা বহুতলে। তারপর প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে দমকল বাহিনী আগুন নেভানোর কাজ করলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। অবশেষে রাতে কেন্দ্রের সাহায্য নেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। তিনি খোদ এই অগ্নিকাণ্ডের তদারকি করছেন। কতক্ষণে আগুন নিভবে, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। তবে আশার কথা, আগুন লাগার পরই ওই বহুতলে যাঁরা ছিলেন, সকলকে বাইরে বের করে আনা হয়। ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তবে সতপুরা ভবনে অবস্থিত আদিবাসী কল্যাণ দফতর ছাড়াও পরিবহণ দফতর ও স্বাস্থ্য দফতরের অফিস একেবারে পুড়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। ভোপাল পুর নিগমের দমকল আধিকারিক রমেশ নীল জানিয়েছেন, এই অগ্নিকাণ্ডে বহুতলের অফিসগুলি সমস্ত আসবাব এবং নথি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। তবে কী ভাবে বহুতলে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনার তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। তবে এই অগ্নিকাণ্ড নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনীতি। বিভিন্ন দুর্নীতি চাপা দিতে এবং সমস্ত ফাইন নষ্ট করতেই সরকারি অফিসের বহুতলে আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল বলে তোপ দেগেছে কংগ্রেস।