নয়া দিল্লি: ৩ বছর আগে পূর্ব লাদাখে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ভারতীয় সেনা ও পিএলএ। তারপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে বিবাদ চরমে উঠেছে। পূর্বা লাদাখে সংঘর্ষের পরও অরুণাচল প্রদেশে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছে পিএলএ। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী তা রুখে দিতে সক্ষম হয়েছে। সম্প্রতি লাদাখ সীমান্ত সমস্যার সমাধানে ফের কম্যান্ডার স্তরে পূর্ব লাদাখে বৈঠক করে ভারত-চিন। লাদাখ সীমান্তে চিনা আগ্রাসনের পর গত তিন বছরে এই নিয়ে মোট ১৮ বার মুখোমুখি বসলেন ভারত-চিন (India-China) সেনা কম্যান্ডাররা। এই বৈঠকের পরই পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ভারত ও চিন নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রাখবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শান্তি ফেরাতে দুই দেশই আলোচনা জারি রাখার পক্ষে সায় দিয়েছে। দুই দেশের জন্যই গ্রহণযোগ্য হবে, এমন সমাধান বের করার ক্ষেত্রে মত দিয়েছে উভয়পক্ষ।
সোমবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, পশ্চিম সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর প্রাসঙ্গিক ইস্যুগুলির সমাধানের বিষয়ে উভয়পক্ষ “খোলামেলা এবং গভীর” আলোচনা করেছে। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, “উভয় দেশই একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার বিষয়ে ইতিবাচক মত দিয়েছে। সামরিক ও কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হবে। দুই দেশের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এমন সমাধান সূত্র বের করা হবে।” এতে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষই নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে।
বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, “সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পশ্চিম সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর প্রাসঙ্গিক ইস্যুগুলির সমাধানের বিষয়ে উভয় পক্ষ খোলাখুলি এবং গভীর আলোচনা করেছে। এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাবে।” উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসেই ভারত ও চিনের বিদেশমন্ত্রীরা সাক্ষাৎ করেছিলেন। সেই বৈঠকের বক্তব্যই সামরিক পর্যায়ের বৈঠকে উঠে আসে বলে জানানো হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে। মার্চে দুই বিদেশমন্ত্রীর মুখোমুখি হওয়ার পর গত রবিবার চুশুল-মোলডো সীমান্তে সামরিক পর্যায়ের ১৮ তম বৈঠক করে ভারত ও চিন। এদিকে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সাংহাই কোঅপারেশন বৈঠকে যোগ দিতে ভারতে আসবেন চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লি শ্যাংফু। তাঁর এই ভারত সফরের আগেই এই সামরিক পর্যায়ের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হল। ফলে এটি খুব তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘর্ষের পর এই প্রথম চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আসছেন ভারতে।