নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে দুই এপিসোডের একটি ডকুমেন্টারি সিরিজ় তৈরি করেছে ব্রিটিশ প্রচার মাধ্যম বিবিসি, নাম – ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চন’ (বঙ্গানুবাদে ভারত: মোদী প্রশ্ন)। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) এই সিরিজ়ের তীব্র সমালোচনা করল ভারত সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে এই ডকু সিরিজ়কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে “পক্ষপাত সহ প্রচারমূলক অংশ” বলা হয়েছে। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়ে সিরিজ়টির “মর্যাদা” বাড়ানো উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেছে সরকার। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, “তথ্যচিত্রটি আসলে নির্মাতা সংস্থার মনগড়া। আমরা মনে করি এটা একটা প্রোপাগান্ডার অংশ। একটি নির্দিষ্ট নিন্দিত বর্ণনাকে তুলে ধরার জন্য এই ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়েছে। এটি পক্ষপাতদুষ্ট, বস্তুনিষ্ঠ নয় এবং আবহমান ঔপনিবেশিক মানসিকতা স্পষ্ট ধরা পড়েছে। প্রতিক্রিয়া দিয়ে এই ধরনের চলচ্চিত্রকে মর্যাদান্বিত করব না।”
বিবিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই ডকু সিরিজ়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুদের মধ্যে উত্তেজনার উপরে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। ২০০২ সালের দাঙ্গায় নরেন্দ্র মোদীর যে ভূমিকা ছিল বলে অনেকে দাবি করে, সেই বিষয়েও তদন্ত করা হয়েছে। বিবিসি আরও বলেছে, ভারতের মুসলিম জনসংখ্যার প্রতি তাঁর সরকারের মনোভাব নিয়ে ক্রমাগত অভিযোগে, নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রীত্ব কীভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে, তাও দেখানো হয়েছে। এছাড়া, ২০১৯-এ পুনঃনির্বাচিত হওয়ার পর মোদী সরকারের গ্রহণ করা বিতর্কিত নীতিগুলি নিয়েও চর্চা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, কাশ্মীরের অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করা, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ইত্যাদি। এই সিরিজ ভারতে দেখা যাবে না।
India on BBC docu on PM Modi and the 2002 Gujarat riots –
Note that this has not been screened in India… This is a propaganda piece, designed to push a particularly discredited narrative. The bias,lack of objectivity & continuing colonial mindset is blatantly visible@MEAIndia pic.twitter.com/rqeztjWMXV— Geeta Mohan گیتا موہن गीता मोहन (@Geeta_Mohan) January 19, 2023
এই সিরিজ় নিয়ে ইতিমধ্যেই ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের অনেকেই টুইটারে বিবিসির এই উদ্যোগ নিয়ে উপহাস করেছে। অনেকেই বলেছেন, বিবিসির উচিত ১৯৪৩ সালের বাংলার দুর্ভিক্ষের উপরও একটি সিরিজ় তৈরি করা উচিত, যার নাম হবে ‘ইউকে: দ্য চার্চিল কোয়েশ্চন’। প্রসঙ্গত, এই মন্বন্তরে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সেই সময় ব্রিটচিশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন উইনস্টন চার্চিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে, ভারতীয়দের থালা থেকে খাবার তুলে নিয়ে গিয়েছিল ব্রিটেন। ব্রিটিশ সৈন্যদের খাওয়ানোর জন্য মজুত করা হয়েছিল সেই খাদ্য। যার বলি হতে হয়েছিল বাংলার মানুষকে। ব্রিটিশ হাউস অব লর্ডসের সদস্য লর্ড রামি রেঞ্জারও এই সিরিজ়ের প্রেক্ষিতে বিবিসির বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদনের অভিযোগ করেছেন।