নয়া দিল্লি: কৈশোর পার করে এখনও যৌবনে পা রাখেনি, এর মধ্যেই অপরাধ জগতে নিজের জায়গা পাকা করে নিয়েছে। শুধু অপরাধই নয়, নিজের অপরাধের কথা জাহির করতেও ভালবাসত ওই কিশোর। ইন্সটাগ্রামের (Instagram) সেই পোস্টের সূত্র ধরেই এবার ওই কিশোরকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)। শুক্রবার দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়, চারটি অপরাধমূলক মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৭ বছরের এক কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই কিশোর নিজের অপরাধমূলক কার্যকলাপের কথা ইন্সটাগ্রামে জানাত। সাধারণ মানুষের মধ্যে যাতে ভয় বজায় থাকে, তার জন্য জেলবন্দি এক গ্যাংস্টারের (Gangster) সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ পরিচয় রয়েছে বলেই দাবি করত।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, আর কয়েকদিন বাদেই ওই কিশোর ১৮ বছরে পা দেবে। এই বয়সেই তাঁর নিজস্ব গ্যাং ছিল। মূলত উত্তর-পূর্ব দিল্লিতেই তাদের গতিবিধি ছিল। চুরি-ছিনতাই থেকে শুরু করে গুলি চালানোর মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। নিজের গ্যাংয়ের প্রতিপত্তি বজায় রাখতে বিনা কারণে নিরাপরাধ ব্যক্তিদের উপরে গুলি চালানোর মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে ওই কিশোর, এমনটাই জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, দিল্লির কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নজরে থাকার জন্যই এই সমস্ত কাজ করত ওই কিশোর। তাঁর দলেরই এক সদস্য আবার জেলবন্দি লরেন্স বিষ্ণোইয়ের গ্যাংয়ের সদস্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করত। উল্লেখ্য, পঞ্জাবী গায়ক সিধু মুসেওয়ালার খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত এই লরেন্স বিষ্ণোই।
জানা গিয়েছে, ধৃত ওই কিশোর সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত সক্রিয় ছিল। নিজের ‘কীর্তি’র কথা ইন্সটাগ্রামে জাহির করতে ভালবাসত সে। কার্যত পুলিশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সে কোনও ব্যক্তিকে খুন করতে যাচ্ছে, তাঁর নাম-পরিচয় সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করত। অভিযুক্ত কিশোরের দাবি, ২০০৭ সালের অ্যাকশন থ্রিলার সিনেমা ‘শ্যুটআউট অ্যাট লোখান্ডওয়ালা’য় অভিনেতা বিবেক ওবেয়রের চরিত্র গ্যাংস্টার মায়া ভাইকে দেখেই অনুপ্রাণিত হয়েছিল। নিজের ইন্সটাগ্রাম আইডিতেও ৩০২ ও ৩০৭ সংখ্যা ব্যবহার করত, যা ভারতীয় দণ্ডবিধিতে খুন ও খুনের চেষ্টার ধারাকে উল্লেখ করে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, দুই দিন আগে ইন্সটাগ্রাম লাইভে ওই কিশোর এক ব্যক্তিকে খুন করবে বলে জানিয়েছিল। তাঁদের গ্যাংয়ের এক সদস্যকে মারধর করা এবং তার ভিডিয়ো করার ‘অপরাধে’ই ওই ব্যক্তিকে খুন করার পরিকল্পনা ছিল বলে জানানো হয়েছে। শুক্রবার ওই ব্যক্তিকে খুন করতে যাওয়ার সময়ই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, সপ্তম শ্রেণি পাশ ওই কিশোরকে ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে একটি খুনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়। সেই বছরই জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড ওই কিশোরকে মুক্তি দেয়। এরপরই ওই কিশোর আরও দুই নাবালকের সঙ্গে মিলে নিজেদের গ্য়াং তৈরি করে এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপ শুরু করে। পুলিশের সঙ্গে শ্যুটআউটেও জড়িত ছিল ওই কিশোর।