Mirwaiz Assassination Case: কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে হত্যার ৩৩ বছর পর ধরা পড়ল ২ হিজবুল জঙ্গি

Hizbul terrorists arrested after 33 years: ১৯৯০ সালের ২১ মে, কাশ্মীর উপত্যকায় হত্যা করা হয়েছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মিরওয়াইজ মহম্মদ ফারুক-কে। সেই ঘটনার ৩৩ বছর পর গ্রেফতার করা হল, সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গিকে।

Mirwaiz Assassination Case: কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে হত্যার ৩৩ বছর পর ধরা পড়ল ২ হিজবুল জঙ্গি
জম্মু ও কাশ্মীর আওয়ামী অ্যাকশন কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন মিরওয়াইজ মহম্মদ ফারুক (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 16, 2023 | 7:09 PM

শ্রীনগর: ১৯৯০ সালের ২১ মে, কাশ্মীর উপত্যকায় হত্যা করা হয়েছিল মিরওয়াইজ মহম্মদ ফারুক-কে। তিনি ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীর আওয়ামী অ্যাকশন কমিটির চেয়ারম্যান তথা হুরিয়ত নেতা মিরওয়াইজ উমর ফারুকের বাবা। সেই হত্যাকাণ্ডে নাম জড়িয়েছিল পাঁচ হিজবুল মুজাহিদিন সন্ত্রাসবাদীর। তাদের মধ্যে দুইজনের ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে, অপর একজন কারা বন্দি। বাকি দুইজন তিন দশক ধরে পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে ছিল। কিন্তু, ফারুক হত্যাকাণ্ডের ৩৩ বছর পর, অবশেষে ওই দুই পলাতক হিজবুল জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানাল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের স্টেট ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি। মঙ্গলবার (১৬ মে), এক সাংবাদিক সম্মেলন করে জম্মু ও কাশ্মীরের সিআইডির বিশেষ ডিজি আরআর সোয়াইন জানিয়েছেন, ওই দুই জঙ্গির নাম জাভেদ ভাট এবং জহুর আহমেদ ভাট। তাদের অবিলম্বে সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

জম্মু ও কাশ্মীরের সিআইডির বিশেষ ডিজি বলেছেন, “জাভেদ ভাট এবং জহুর আহমেদ ভাটকে আজ গ্রেফতার করা হয়েছে। দিল্লি থেকে ঘোষিত অপরাধীদের নোটিশ নিয়ে সিবিআই-এর একটি দল এসেছে। তারা ওই দুই জঙ্গিকে হেফাজতে নিয়েছে। এরপর তাদের বিচার করা হবে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ সন্ত্রাসবাদীর মধ্যে দু’জন ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছে। আরেকজন জেলে বন্দি। এই দুই পলাতককে বিচার বিভাগের আওতায় আনা হচ্ছে। এদিনের গ্রেফতারির ফলে মিরওয়াইজ হত্যার সকল অভিযুক্তকেই বিচারের আওতায় আনা গেল।”

কিন্তু, ৩৩ বছর ধরে তারা কীভাবে নিরাপত্তা বাহিনীর চোখে ধুলো দিল? জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ জানিয়েছে, ওই হত্যাকাণ্ডের পরই এই দুই জঙ্গি গা ঢাকা দিয়েছিল। দীর্ঘদিন তারা নেপাল ও পাকিস্তানে লুকিয়ে ছিল। কয়েক বছর আগে তারা কাশ্মীরে ফিরে এসেছিল। তবে উপত্যকায় ফিরেও তারা লো প্রোফাইল বজায় রেখেছিল। যাতে, চট করে পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনীর নজর তাদের উপর না পড়ে। একইসঙ্গে, কাশ্মীরে ফেরার পর, তারা তাদের ঠিকানা পরিবর্তনও করেছিল। আগে যে বাড়িতে থাকত, সেই বাড়ি বিক্রি করে অন্যত্র উঠে গিয়েছিল। এত সতর্কতা নেওয়া সত্ত্বেও, শেষ রক্ষা হল না। ৩৩ বছর পর হলেও, বিচারের আওতায় আসতেই হল তাদের।

গত শতাব্দীর আটের দশকের শেষদিকে কাশ্মীরের দারুণ জনপ্রিয় ছিলেন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মিরওয়াইজ মহম্মদ ফারুক। তবে, হিজবুল মুজাহিদিন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী তাঁকে ‘শান্তিকামী’ এবং ‘ভারত সরকারের এজেন্ট’ বলে অভিযুক্ত করেছিল। এরপরই তাঁকে হত্যা করা হয়। সেই অপরাধের প্রেক্ষিতে শ্রীনগরের নগেন থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। পরে তৎকালীন কাশ্মীর সরকার তদন্তটি সিবিআই-এর কাছে হস্তান্তর করে। সিবিআই চার্জশিটে আবদুল্লা বাংরু, আব্দুল রেহমান শিগান, আইয়ুব দার, জহুর আহমদ ভাট এবং জাভেদ আহমদ ভাট নামে পাঁচ জঙ্গির নাম ছিল। এদের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে দুটি পৃথক সংঘর্ষে প্রাণ যায় বাংরু এবং শিগানের। তদন্ত এবং বিচারের দীর্ঘ এবং কঠিন আইনি প্রক্রিয়ার পর, ২০০৯ সালে দিল্লির এক টাডা আদালত আইয়ুব দারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। পলাতক ছিলেন জহুর এবং জাভেদ। সিবিআই তদন্তে জনা গিয়েছিল, এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে হাত ছিল পাক গুপ্তচয় সংস্থা আইএসআই-এর। মিরওয়াইজ মহম্মদ ফারুককে হত্যার আগে, পাঁচজনই পাকিস্তানে গিয়েছিল জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিতে। কাশ্মীরে ফেরার পর, তাদের নিয়মিত নির্দেশ দিত আইএসআই-এর হ্যান্ডলাররা।