মুম্বই: পড়া না পারলে বা কোনও ভুল করলে, শিক্ষকদের হাতে চড় খেয়েছেন অনেকেই। গুরু হিসাবে শাস্তি দিতেই পারেন শিক্ষক। কিন্তু সেই শিক্ষকের যদি উদ্দেশ্য ঠিক না হয়? ১০ বছর বয়সী এক কিশোরীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তাঁর ব্যাডমিন্টন প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে। সেই প্রশিক্ষকের বয়সও খুব একটা বেশি নয়, মেরেকেটে ২৭ বছর। অভিযোগ, ঠিকভাবে খেলতে না পারায় ছাত্রীকে শাস্তি দেয় শিক্ষক। সেই শাস্তি ছিল স্তনে চিমটি, নিতম্বে চড়!
চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ের স্পেশাল পকসো আদালতের তরফে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয় ছাত্রীর সঙ্গে অভব্য আচরণ ও অশালীনভাবে স্পর্শ করার অপরাধে। জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে ঘটনাটি ঘটেছিল। পিটিশনারের দাবি অনুযায়ী, মুম্বইয়ের মুলুন্দে ওই যুবকের কাছে ব্যাডমিন্টন শিখতে যেত ১০ বছরের কিশোরী। সপ্তাহে তিনদিন তাঁর ক্লাস থাকত। সব ঠিকই চলছিল। হঠাৎ একদিন কুমতলব আঁটেন ওই শিক্ষক। ১০ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ ক্লাসে যায় ওই কিশোরী। ক্লাস শেষে পরিচারিকা যখন তাঁকে আনতে যান, দেখতে পান যে কিশোরীর চোখে-মুখে ভয়-আতঙ্ক। বাড়ি আসার পর তাঁর মা জানতে চান কী হয়েছে। তখন কিশোরী জানায়, প্রাকটিসের সময় ভুল করার জন্য কোচ তাঁর স্তনে ও কোমরে চিমটি কেটেছে। অশালীনভাবে স্পর্শ করেছে, চড় মেরেছে নিতম্বে।
এরপরই কিশোরীর মা থানায় অভিযোগ জানান। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে যুবককে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ (যৌন হেনস্থা, মহিলার সম্মানহানি) ধারা ও পকসো আইনে গ্রেফতার করা হয়।
যুবক প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করে এবং কিশোরীকে স্পর্শ করার প্রসঙ্গে নানা অজুহাত দেয়। অভিযুক্ত যুবক দাবি করে, যদি ওই ঘটনা যৌন হেনস্থা হত, তাহলে এরপরও কেন কিশোরী নিয়মিত এসে ট্রেনিং করত তাঁর কাছে? র্যাকেটের টেকনিক শেখানোর জন্য তিনি কেবল কিশোরীর হাত ধরেছিলেন।
তবে বৃহস্পতিবার পকসো আদালতের তরফে ওই যুবককেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়। প্রশিক্ষণের নামে কোনও নারীর শরীর, বিশেষ করে গোপনাঙ্গ স্পর্শ করাকে নায্য বলা যায় না বলেই জানানো হয় আদালতের তরফে। অভিযুক্ত যুবককে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে বলা হয়।