মুম্বই: ব্রেক-আপের পর মানসিক ধাক্কা বা দুঃখের জেরে কেউ আত্মহত্যা করলে, তা আত্মহত্যায় প্ররোচনা বলে গণ্য করা যায় না। এমনটাই পর্যবেক্ষণ আদালতের। প্রেমিকের মৃত্যুতে আত্মহত্যার প্ররোচনায় অভিযুক্ত প্রেমিকাকে মুক্তিও দিল আদালত।
মুম্বই আদালতে একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগের মামলার শুনানি চলছিল। আদালতের তরফে বলা হয়, ” নিজের ইচ্ছামতো সঙ্গী বদল নৈতিগতভাবে অনায্য, তবে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া বা সম্পর্কে প্রত্যাখান হওয়ার ক্ষেত্রে আইনে কোনও শাস্তি নেই।”
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ে অতিরিক্ত সেশন আদালতের বিচারপতি এনপি মেহতা তাঁর নির্দেশে বলেন যে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগের ক্ষেত্রে অভিযুক্তের দিক থেকে সোজাসুজি আত্মহত্যার উপদেশ বা উসকানির প্রমাণ থাকা প্রয়োজন। নিজের প্রেমিক বা প্রেমিকা সম্পর্ক ভাঙার পর যে কেউ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তবে যদি কেউ সম্পর্ক ভাঙার পরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং সেই মানসিক আঘাতে আত্মহত্যা করেন, তবে তা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারার ১০৭ অনুচ্ছেদের অধীনে আত্মহত্যায় প্ররোচনা বলে গণ্য করা যায় না।
২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি নীতিন কেনি নামক এক যুবক গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। এরপরই তাঁর পরিবারের তরফে যুবকের প্রাক্তন প্রেমিকা মনীষা ও তাঁর হবু বর রাজেশ পানওয়ারের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। তাদের অভিযোগ ছিল, মনীষার সঙ্গে নীতিনের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মনীষা হঠাৎ সম্পর্ক ভেঙে দেয়। দিন কয়েকের মধ্যেই রাজেশ পানওয়ারের সঙ্গে তাঁর বাগদান হয়। মনীষা ও রাজেশ নীতিনের উপরে মানসিক অত্যাচার করত।
অন্যদিকে, বিবাদী পক্ষের তরফে জানানো হয়, আত্মঘাতী ওই যুবক সম্পর্ক ভাঙার পরও মনীষাকে স্টক করত। মনীষা এর জন্য পুলিশে অভিযোগও দায়ের করে।
আদালতের তরফে জানানো হয়, দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে বোঝা গিয়েছে যে আত্মঘাতী যুবক নিতীন সম্পর্ক ভাঙার কারণে দুঃখী ছিল। মনীষার বাগদানের খবর পাওয়ার পর সে অবসাদে চলে যায়। কিন্তু শুধুমাত্র এই কারণেই সে আত্মহত্যা করেছে, এমনটা গণ্য করা যায় না।