High Court News: ভিক্ষা করে দিনগুজরান মুসলিম স্বামীর, ভরণপোষণ চেয়ে হাইকোর্টে ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’
High Court on Muslim Wives: বিচারপতি আরও বলেন, 'শিক্ষার অভাবে এই ধরনের বিয়ে এখনও হয়ে থাকে, এটা ঠিক। কিন্তু আদালত তাতে সম্মতি দেয় না। একজন ব্যক্তি তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন চালাচ্ছেন, এদিকে একটার পর একটা বিয়ে করে যাচ্ছেন। আর তাদের ভরণপোষণের দায়িত্বও নিচ্ছেন না। এটা চলতে পারে না।'

কেরল: সামর্থ্য না থাকলে, একাধিক বিয়ের প্রয়োজন নেই। একটি মুসলিম বিবাহ বিবাদ সংক্রান্ত মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ কেরল হাইকোর্টের। একাধিক স্ত্রীর ভরণপোষণের ক্ষমতা না থাকলে ‘শরিয়ত আইন’ মেনে একাধিক বিয়ে করার দরকার নেই বলেই পর্যবেক্ষণ বিচারপতির। পাশাপাশি, বহুবিবাহের ক্ষেত্রে ‘ভুল ধারণা’ প্রযোজ্য রয়েছে বলেই মনে করেন বিচারপতি।
সম্প্রতি এক মহিলা তাঁর স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণের দাবিতে দ্বারস্থ হন কেরল হাইকোর্টে। বিচারপতি পিভি কুনহিকৃষ্ণনের বেঞ্চে ওঠে সেই মামলা। স্বামীর কাছ থেকে মাসিক ১০ হাজার টাকা ভরণপোষণ চেয়ে মামলা করেন তিনি। তার অভিযোগ, সেই ভরণপোষণ দিতে স্বামী কোনও ভাবেই রাজি হচ্ছেন না। ভিক্ষাবৃত্তি করে দিনগুজরান করেন বলে যুক্তি তুলে নানা ভাবে টালবাহানা দেখাচ্ছেন। আদালতকে মামলাকারী জানান, তিনি ওই ব্য়ক্তির দ্বিতীয় স্ত্রী। স্বামী ভিক্ষা করে সংসার চালাচ্ছে, তার জন্য ভরণপোষণ দিচ্ছেন না। এদিকে আরও একটা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উচ্চ আদালতে দ্বারস্থ হওয়ার আগে ওই মামলাকারী স্বামীর থেকে ভরণপোষণ নেওয়ার জন্য পারিবারিক আদালতেও আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু স্বামীর তাকে ভরণপোষণ দেওয়ার ক্ষমতা নেই বলে ওই মহিলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল নিম্ন আদালত। বিচারক যুক্তি দিয়েছিলেন, ‘তিনি নিজেই ভিক্ষা করে সংসার চালাচ্ছেন, আপনাকে কীভাবে টাকা দেবে?’
এরপরই পারিবারিক আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘উনি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। আর নিজের ধর্মীয় আইনের তিনি অপব্যবহার করছেন। মামলাকারী আমাদের জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির মাসে প্রায় ২৫ হাজার টাকার কাছাকাছি আয় এবং তিনি বর্তমানে তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গেই থাকেন। খুব শীঘ্রই নাকি আরও একটি বিয়ে করবেন। কিন্তু আদালত তাতে সম্মতি দেয় না। তিনি তার প্রথম দুই স্ত্রীয়ের একসঙ্গে ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে পারছে না। এদিকে আরও একটা বিয়ে করতে চলেছেন। তা কোনও মতেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।’
বিচারপতি আরও বলেন, ‘শিক্ষার অভাবে এই ধরনের বিয়ে এখনও হয়ে থাকে, এটা ঠিক। কিন্তু আদালত তাতে সম্মতি দেয় না। একজন ব্যক্তি তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন চালাচ্ছেন, এদিকে একটার পর একটা বিয়ে করে যাচ্ছেন। আর তাদের ভরণপোষণের দায়িত্বও নিচ্ছেন না। এটা চলতে পারে না।’ পাশাপাশি, ওই মহিলার জন্য কোনও ভরণপোষণের নির্দেশ না দিয়ে তার পরিবর্তে প্রশাসনকে খাবার এবং আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিতে বলেছে আদালত।
