Necrophilia: মৃতদেহের সঙ্গে যৌনতার বিষয়ে নেই কোনও আইন! কেন্দ্রকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ হাইকোর্টের
Necrophilia Karnataka HC: ভারতীয় দণ্ডবিধির আওতায় এখনও পর্যন্ত নেক্রোফিলিয়া বা মৃতদেহের সঙ্গে যৌনতার বিষয়ে কোনও বিধান নেই। কেন্দ্রকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ কর্নাটক হাইকোর্টের।
বেঙ্গালুরু: ভারতীয় দণ্ডবিধির আওতায় (IPC) ধর্ষণের আইন এবং সাজা সংজ্ঞায়িত হয়েছে ৩৭৫ ধারায়। কিন্তু, মৃতদেহের সঙ্গে যৌনতাকে এই ধারায় অপরাধ বলা হয়নি। বস্তুত, মৃতদেহের সঙ্গে যৌনতার বিষয়ে কোনও বিধানই নেই ভারতে। সম্প্রতি এক মামলার রায় ঘোষণার সময় এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করে কর্নাটক হাইকোর্ট। ‘নেক্রোফিলিয়া’ অর্থাৎ মৃতদেহের সঙ্গে যৌনতাকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য, কেন্দ্রীয় সরকারকে অবিলম্বে ভারতীয় দণ্ডবিধিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করার আহ্বান জানিয়েছে আদালত।
বিচারপতি বি বীরাপ্পা এবং বিচারপতি বেঙ্কটেশ নায়েকের বেঞ্চ জানিয়েছে, ৩৭৫ ধারার অধীনে তো নয়ই, এমনকি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা, অর্থাৎ অস্বাভাবিক যৌন অপরাধের আওতাতেও পড়ে না মৃতদেহের সঙ্গে যৌনতা। এই বিষয়ে আদালত বলেছে, “ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ এবং ৩৭৭ ধারাগুলি মানুষ বা ব্যক্তি সংক্রান্ত। মৃতদেহকে মানুষষ বা ব্যক্তি বলা যায় না। তাই, মৃতদেহের সঙ্গে যৌনতার ক্ষেত্রে ৩৭৫ ধারা বা ৩৭৭ ধারার বিধানগুলি প্রয়োগ করা যায় না।”
তাই, মৃত ব্যক্তির দেহের মর্যাদা রক্ষার্থে, নেক্রোফিলিয়া বা মৃতদেহের সঙ্গে যৌনতাকে অপরাধে পরিণত করার জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধিতে অবিলম্বে পরিবর্তন করা প্রয়োজন। আদালতের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে বলা হয়েছে, হয় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা সংশোধন করতে হবে। অথবা, নেক্রোফিলিয়া বা মৃতদহের সঙ্গে যৌনতাকে অপরাধে পরিণত করার জন্য একটি পৃথক দণ্ডবিধি প্রবর্তন করতে হবে। পাশাপাশি, কোনও মহিলার মৃতদেহের বিরুদ্ধে অপরাধ রোধ করতে সমস্ত সরকারী মর্গে এবং বেসরকারি হাসপাতালে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারকে।
২১ বছর বয়সী এক মহিলাকে হত্যা এবং তারপর তার দেহের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের দায়ে এক ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল দায়রা আদালত। নিম্ন আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করেছিল দোষী। সেই আবেদনেরই শুনানি চলছিল কর্নাটক হাইকোর্টে। আবেদনকারী জানিয়েছিল, এই ক্ষেত্রে সরকার পক্ষ জানিয়েছে, প্রথমে নির্যাতিতাকে হত্যা করা হয়েছে এবং পরে তার দেহের উপর যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। অতএব, এই ক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারা প্রয়োগ করা যাবে না। আবেদনকারী আরও বলেছিল, সে যা করেছে তা নেক্রোফিলিয়া, আর এই বিষয়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধিতে কোনও নির্দিষ্ট বিধান নেই। তাই তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া উচিত।
আদালত রায় দিয়েছে, আবেদনকারীর অপরাধকে স্যাডিজম বা নেক্রোফিলিয়া হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনে এই অপরাধের ক্ষেত্রে শাস্তি দেওয়ার মতো কোনও বিধান নেই। দায়রা আদালতের বিচারক তাকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। সেই রায় খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, এই ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে শুধুমাত্র নরহত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা যাবে।