ফাঁকা খাতা জমা দিয়ে ডাক্তার! NEET পরীক্ষায় বড়-সড় দুর্নীতি, ধৃত শিক্ষক
NEET scam: ভবিষ্যতে কারা দেশের ডাক্তার হবেন, তা বাছাইয়ের জন্য এনইইটি (ইউডি) (NEET (UG)) পরীক্ষা নেওয়া হয়। এই সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করলে তবেই ভারতের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে স্নাতক স্তরে এমবিবিএস (MBBS), ডেন্টাল (BDS) কিংবা এবং আয়ুষ (BAMS, BUMS, BHMS) কোর্স পড়া যায়। আর এবার, এই প্রবেশিকা পরীক্ষাকে কেন্দ্র করেই ফাঁস হল এক বড় মাপের দুর্নীতি চক্র।
গোধরা: যে প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা নেই, সেগুলো ফাঁকা রাখতে বলা হয়েছিল। পরীক্ষা শেষে খাতা জমা দেওয়ার পর, ওই ফাঁকা জায়গায় উত্তরগুলি লিখে দিত শিক্ষক। আর এর বদলে ওই শিক্ষককে দিতে হত ১০ লক্ষ টাকা। ভবিষ্যতে কারা দেশের ডাক্তার হবেন, তা বাছাইয়ের জন্য এনইইটি (ইউডি) (NEET (UG)) পরীক্ষা নেওয়া হয়। এই সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করলে তবেই ভারতের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে স্নাতক স্তরে এমবিবিএস (MBBS), ডেন্টাল (BDS) কিংবা এবং আয়ুষ (BAMS, BUMS, BHMS) কোর্স পড়া যায়। আর এবার, গুজরাটে এই প্রবেশিকা পরীক্ষাকে কেন্দ্র করেই ফাঁস হল এক বড় মাপের দুর্নীতি চক্র। এই ঘটনার জেরে এক স্কুল শিক্ষক এবং আরও দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। অন্তত ছয় জন এনইইটি (ইউজি) পরীক্ষার্থীকে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাদের প্রশ্নপত্র সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে, অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের পঞ্চমহল জেলার গোধরায়। গত রবিবার (৫ মে) ছিল এনইইটি (ইউজি) পরীক্ষা। গোধরার জয় জলরাম স্কুল পরীক্ষাকেন্দ্র হিসাবে মনোনীত হয়েছিল। সেখানকার পদার্থবিদ্যার শিক্ষক, তুষার ভাট ছিলেন ওই পরীক্ষা-কেন্দ্রের উপ-সুপারিনটেনডেন্ট। এফআইআর অনুসারে, ওই শিক্ষকের সঙ্গে কয়েকজন পরীক্ষার্থীর, অর্থের বিনিময়ে তাদের না জানা প্রশ্নের উত্তর লিখে দেওয়ার বিষয়ে বোঝাপড়া হয়েছিল। তবে, পরীক্ষার আগেই এই বেআইনি কার্যকলাপ সম্পর্কে এক গোপন সূত্রে খবর পেয়েছিলেন পঞ্চমহলের জেলাশাসক।
তাঁর নির্দেশ অনুসারে, পরীক্ষার দিন ওই স্কুলে হানা দেন জেলার অতিরিক্ত কালেক্টর এবং জেলা শিক্ষা অফিসার-সহ একটি তদন্তকারী দল। স্কুলে গিয়ে তাঁরা তুষার ভাটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাঁর মোবাইল ফোনও পরীক্ষা করা হয়। তুষার ভাটের ফোন থেকে ১৬ জন পরীক্ষার্থীর একটি তালিকা পাওয়া যায়। তালিকায় তাদের নামের সঙ্গে সঙ্গে, তাদের রোল নম্বর এবং পরীক্ষার কেন্দ্রও ছিল। পরশুরাম রায় নামে এই মামলার আরেক অভিযুক্ত তালিকাটি হোয়াটসঅ্যাপ করে পাঠিয়েছিলেন তুষার ভাটকে। এরপর জেরার মুখে, অপরাধ স্বীকার করে নেন ও শিক্ষক। তিনি জানান, ওই তালিকার ছয়জন পরীক্ষার্থী, তাদের প্রশ্নপত্র সমাধান করার জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছিল। ।
এরপর, তুষার ভাটের গাড়ি থেকে নগদ ৭ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। জানা যায়, ওই ছয় প্রার্থীর একজন ওই টাকা অগ্রিম হিসাবে দিয়েছিল আরিফ ভোরা নামে আরেক অভিযুক্তকে। আরিখ ভোরা সেই টাকা তুলে দিয়েছিলেন তুষার ভাটের হাতে। তুষার ভাট, পরশুরাম রায় এবং আরিফ ভোরাকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারী দলটি তুষার ভাটের মোবাইল ফোন, নগদ ৭ লক্ষ টাকা এবং যে গাড়িটি থেকে ওই নগদ উদ্ধার হয়েছিল, সেই গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত করে। এই বিষয়ে জেলাশাসকের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেন তারা। পরে, জেলাশাসক এই বিষয়ে একটি এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেন।
বুধবার রাতে (৮ মে), গোধরা তালুক থানায় এফআইআর দায়ের করেন জেলা শিক্ষা অফিসার, কিরিট প্যাটেল। তিনি জানিয়েছেন, “আমাদের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” প্যাটেল বলেছেন। গোধরা তালুক থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা এবং ফৌজদারি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ঘটনার আরও কেউ কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই বিষয়ে আরও তদন্ত করা হচ্ছে। এর আগে বিহারের পটনায় এনইইটি-ইউজি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ২০-২৫ জন পরীক্ষার্থী, পরীক্ষার অনেক আগেই হাতে প্রশ্নপত্র পেয়ে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।