কলকাতা: খেজুর গাছে হাঁড়ি বাঁধো মন… তবে মন বাঁধলে ক্ষতি নেই, শরীর বাঁধলে সাবধান। এই ফলের রস থেকেও ছড়িয়ে পড়ছে নিপা ভাইরাস (Nipah Virus)। অন্তত এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। কেরলে নতুন করে ছড়িয়েছে নিপা সংক্রমণ। মারণ ভাইরাসে ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন ৬ জন। মৃত্য়ু হয়েছে ২ জনের। বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৪। বাদুড় থেকেই মূলত নিপা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। তবে কেরলে (Kerala) ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণের অন্যতম কারণ হয়ে উঠছে খেজুর (Date) ও তালের রস (Palm Saps)।
গ্রাম বাংলায় খেজুর ও তালের রস খাওয়ার চল রয়েছে বহু যুগ ধরেই। শুধু কেরল বলে নয়, বিভিন্ন রাজ্যেই মানুষ ভোরবেলায় গাছে উঠে খেজুর বা তাল পাড়েন। সেই গাছের রসও বিক্রি করা হয়। তাড়িও বানানো হয়। আর এখানেই বিপদ। কারণ খেজুর ও তাল গাছ থেকেও ছড়াচ্ছে নিপা ভাইরাস।
ফ্রুট ব্যাট- এই প্রজাতির বাদুড় থেকেই ছড়ায় নিপা ভাইরাস। কাঠবিড়ালি থেকে শুরু করে শূকর, বিভিন্ন প্রাণীদেহে ছড়িয়ে পড়ে নিপা ভাইরাস। এর পাশাপাশি মানবদেহেও সংক্রমিত হয় নিপা ভাইরাস। চলতি বছরে কেরলে নিপা সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তা বাংলাদেশি ভ্য়ারিয়েন্ট। তবে এই ভ্যারিয়েন্ট কীভাবে মানবদেহে ছড়িয়ে পড়েছে, সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও, সংক্রমণ এড়াতে প্রাণীদের সংস্পর্শ যেমন এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে, তেমনই ফলের রস পান করা থেকেও বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
সংক্রমিত বাদুড় যদি এই গাছগুলিতে বসে, তবে সেখান থেকে গাছের মধ্যেও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এই গাছের রস বের করা হলে, সেখান থেকেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। ২০০১ সাল থেকে ২০০৭ সাল অবধি বাংলাদেশে মোট ৭ বার নিপা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল।সেই সময়ও ফ্রুট ব্যাট থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রমণের উৎস ট্রাক করে বিশেষজ্ঞরা জানতে পারেন, প্রাণীদেহ থেকে মানবদেহে, মানবদেহ থেকে অপর মানবদেহে সংক্রমণের পাশাপাশি, অসুস্থ পশু ও কাঁচা খেজুর ও তালের রস থেকেও সংক্রমণ ছড়িয়েছিল।
শুধু খেজুর বা তাল গাছের রসেই নয়, ফল থেকেও নিপা সংক্রমণ ছড়াতে পারে। যদি কোনও বাদুড় ফল খায়, তবে সেই ফলে তিনদিন অবধি ভাইরাস জীবিত থাকতে পারে। এর কারণ হল, ফলের মধ্যে যে চিনি ও টকভাব থাকে, তার জেরে কম পিএইচ লেভেলেও ভাইরাস দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারে। যদি বাদুড়ের কামড়ানো ফল কোনও ব্যক্তি খান, তবে তার ট্রাকিয়া অবধি ভাইরাস পৌঁছে যেতে পারে।