নয়া দিল্লি: বাক-স্বাধীনতার উপর কোনও বিধি-নিষেধ জারি নয়। সাধারণ নাগরিকের মতো বিধায়ক, সাংসদদের পদে আসীন ব্যক্তিদেরও বাক-স্বাধীনতা রয়েছে। মঙ্গলবার মন্ত্রী, সাংসদদের কথার উপর লাগাম জারি নিয়ে এক মামলার শুনানিতে এমনই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। এটা যে সংসদের সদস্যদের জন্য একটি বড় জয়, তা বলা বাহুল্য
সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, “সংবিধানের ১৯(১)(a) ধারা মোতাবেক সংসদ ও বিধানসভার সদস্যদের সাধারণ নাগরিকের মতোই সমান বাক স্বাধীনতা রয়েছে। সরকারি কর্মীদের বাক স্বাধীনতার উপরও বিধি-নিষেধ জারি করা যাবে না।” সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি গঠিত ৫ বিচারপতি, এস আব্দুল নাজির, বিচারপতি এ.এস বোপান্না, বিচতারপতি বি.আর গবাই, বিচারপতি ভি. রামাসুব্রহ্মনিয়াম এবং বিচারপতি বি.ভি নাগরত্নার বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। সংবিধানের ১৯(১)(a) ধারাটি সকল নাগরিকের জন্যই প্রযোজ্য। ফলে জনপ্রতিনিধি থেকে সরকারি কর্মীদের বাকস্বাধীনতার উপর কোনভাবে বিধি-নিষেধ জারি করা যাবে না।
যদিও বিচারপতি বি.ভি নাগরত্না সংবিধানের ১৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বাকস্বাধীনতার উপর কড়া বিধি-নিষেধ আরোপ করার পক্ষে মন্তব্য করেছেন। তাঁর মতে, ঘৃণ্য মন্তব্য সমাজের মূল্যবোধ বিনষ্ট করে এবং নাগরিকদের আক্রমণ করে, বিশেষত যাঁরা সমাজের অনগ্রসর শ্রেণি থেকে উঠে এসেছেন। তাই জনপ্রতিনিধি থেকে সরকারি পদে আসীন ব্যক্তিদের বাকস্বাধীনতা এবং আচরণের বহিঃপ্রকাশ সঠিক হওয়া উচিত। বিচারপতির কথায়, “জনপ্রতিনিধিদের কথাবার্তার উপর নিজের বিধি-নিষেধ আরোপ করা উচিত।”
প্রসঙ্গত, গণধর্ষণে নির্যাতিতা সম্পর্কে উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী আজম খান একটি বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। গণধর্ষণের ঘটনাটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। তার পরিপ্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয় এবং জনপ্রতিনিধি থেকে সরকারি পদে আসীন ব্যক্তিদের বাকস্বাধীনতার উপর বিধি-নিষেধ জারি করার আবেদন জানানো হয়। সুপ্রিম কোর্টের ৫ সদস্যের বেঞ্চের কাছে অ্যাডভোকেট কালীশ্বরম রাজ আবেদন জানিয়েছিলেন, বিধায়ক-সাংসদদের ঘৃণ্য মন্তব্যের উপর বিধি-নিষেধ জারি করা উচিত।