AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

INS Nistar: নেই ঢাল, নেই তরোয়াল, তবু সমুদ্রযুদ্ধে তুরুপের তাস INS নিস্তার

আইএনএস নিস্তারকে কমিশনড করে নৌ-সেনা প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠি বললেন, 'ইন ইন্ডিয়া, ওল্ড শিপস নেভার ডাই। দে অলওয়েজ রিটার্ন ইন আপগ্রেডেড ফর্ম।' ভারতীয় নৌ-সেনায় যুদ্ধজাহাজের জার্নি কখনও শেষ হয় না। কোনও না কোনও ভাবে তারা ফিরে আসে।

INS Nistar: নেই ঢাল, নেই তরোয়াল, তবু সমুদ্রযুদ্ধে তুরুপের তাস INS নিস্তার
| Edited By: | Updated on: Jul 19, 2025 | 9:25 PM
Share

১৯৭১-এর ১২ নভেম্বর। ভারত-পাক যুদ্ধ তখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। পাক নেভির মোকাবিলায় বঙ্গোপসাগর ঘিরে রেখেছে ভারতীয় নৌ-সেনার নাভাল ফ্লিট। আইএনএস বিক্রান্তের নেতৃত্বে সেই ঘোরাটোপ ভাঙার ক্ষমতা ছিল না পাকিস্তানের। অথচ বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় জলসীমার সামনি-সামনি খুব, খুব দরকার। বাধ্য হয়ে পাকিস্তান কী করল? তাদের হাতে থাকা সেরা সাবমেরিন পিএনএস গাজিকে নামিয়ে দিয়েছিল। ২৩ নভেম্বর আইএনএস বিক্রান্তকে খুঁজতে খুঁজতে মাদ্রাজ উপকূলের কাছে পৌঁছয় গাজি। কিন্তু বিক্রান্ত তখন সেখান থেকে অনেক দূরে। এরপর ১০দিন ধরে লুকোচুরির পর গাজির সন্ধান পায় আইএনএস রাজপুত। আইএনএস রাজপুতের ডেপথ চার্জে পিএনএসর সলিলসমিধি হয়েছিল কীনা তা নিয়ে বিতর্ক আছে।

কিন্তু যাই হোক, পিএনএস গাজি আর কখনও পাকিস্তানে ফেরেনি। এই পুরো সময়টা আইএনএস গাজিকে লোকেট করার ভার ছিল আইএনএস নিস্তারের উপর। আইএনএস নিস্তার – সেই সময় ভারতীয় নৌ-সেনার ভাঁড়ারে থাকা সাবমেরিন রেসকিউ ভেহিকেলস। ১৯৬৯ সালে রাশিয়ার ব্যবহৃত ওই জাহাজ হাতে পেয়েছিল ভারত। আজ বিশাখাপত্তনমে নৌ-সেনা ঘাঁটিতে নতুন করে ডিউটি শুরু করল আইএনএস নিস্তার। ভারতে তৈরি প্রথম ইন্ডিজেনিয়াস ড্রাইডিং সাপোর্ট ভেহিকেলস বা ডিএসভি। সমুদ্রের গভীরে বিভিন্ন ধরণের অপারেশনের জন্য তৈরি যুদ্ধজাহাজ। এই ধরণের ড্রাইভিং সাপোর্ট ভেহিকেলসের কাজ মূলত দুটি। এক, সাবমেরিনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। দুই, যুদ্ধজাহাজের উপর হামলা হলে বা মাইন বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাকে নিরাপদে ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া।

এই প্রথম নিজস্ব প্রযুক্তিতে এই ধরণের যুদ্ধজাহাজ তৈরি করল ভারত। তবে এই জাহাজে কোনও অস্ত্র নেই। মিসাইল নয়, কিচ্ছু না। এক কথায় বলতে হলে, নেই ঢাল, নেই তরোয়াল। নিধিরাম সর্দার। আইএনএস নিস্তারকে কমিশনড করে নৌ-সেনা প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠি বললেন, ‘ইন ইন্ডিয়া, ওল্ড শিপস নেভার ডাই। দে অলওয়েজ রিটার্ন ইন আপগ্রেডেড ফর্ম।’ ভারতীয় নৌ-সেনায় যুদ্ধজাহাজের জার্নি কখনও শেষ হয় না। কোনও না কোনও ভাবে তারা ফিরে আসে। আইএনএস নিস্তার হাতে আসায় নৌ-সেনা কী সুবিধা হবে? নৌ-সেনা প্রধান বললেন, ‘আইএনএস নিস্তার, প্রযুক্তি এবং কার্যকারিতায় দুনিয়ার যে কোনও যুদ্ধজাহাজের সমান। এর মাধ্যমে শুধু সাবমেরিনগুলোর নিরাপত্তাই নিশ্চিত হবে না, মাল্টি লেয়ার সাবমেরিন ডায়ানেমিক ফ্লিট বা MLSDF-র লক্ষ্যেও অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে ভারত। MLSDF অর্থাত্‍ বিভিন্ন ধরণের সাবমেরিন – অ্যাটাক ও রেসকিউ ভেহিকেলস নিয়ে একটা বলয়। শুধু ৪ দেশ – আমেরিকা, চিন, রাশিয়া, জার্মান নেভিতেই এই ধরণের ইউনিট রয়েছে। এর লক্ষ্য, যে কোনও পরিস্থিতিতে যে কোনও হামলা বা প্রত্যাঘাতের জন্য তৈরি থাকা। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতীয় নৌ-সেনাও একই লক্ষ্যে পৌঁছতে চায়।’

২০১৬ সাল থেকে প্রায় এক ডজন অত্যাধুনিক সাবমেরিন হাতে পেয়েছে নৌ-সেনা। সঙ্গে অন্যান্য যুদ্ধজাহাজ মিলিয়ে সংখ্যাটা তিরিশের বেশি। তবে প্রয়োজন ও সেনার চাহিদার তুলনায় সংখ্যাটা এখনও কম। প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে খবর, আগামী সাত থেকে আট বছরে আমাদের বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ এ সাবমেরিন বাতিলের খাতায় চলে যাবে। সেই কারণেই আরও ৬টি সাবমেরিন ও ১২টি অন্য জাহাজ কেনার ছাড়পত্র দিয়েছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক। কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিদেশ থেকে প্রযুক্তি নিলেও এই জাহাজগুলো ভারতেই তৈরি হবে। সেজন্য তিনটি পার্টনার কান্ট্রির সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে রাজনাথ সিংয়ের মন্ত্রক। এটা ইন্ডিয়ান নেভির মিশন টু জিরো থার্টি ফাইভের অন্যতম অংশ। ২০২৩ সালে নেভি ডে’র দিন এই প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতের নৌ-সেনাকে দুনিয়ার সেরা পাঁচ দেশের অন্যতম করে তুলতেই মিশন টু জিরো থার্টি ফাইভের পরিকল্পনা।