তালিবান কি জঙ্গি? কেন্দ্রের কাছে জানতে চাইলেন ওমর
Afghanistan : তালিবান প্রসঙ্গে কী ভাবছে কেন্দ্র ? তালিবান কি জঙ্গি ? তাহলে কেন তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে দিল্লি ? কেন্দ্রকে অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য বললেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ।
নয়াদিল্লি : তালিবানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শুরু করেছে দিল্লি। কিন্তু আগামী দিনে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কেমন হবে? এখনও এই নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। আফগানিস্তান ইস্যুতে কিছুটা ‘সমঝে চলো’ নীতি নিয়ে চলছে মোদী সরকার। আর এই নিয়েই এবার কড়া ভাষায় কেন্দ্রকে আক্রমণ করলেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। তাঁর সাফ কথা, তালিবান জঙ্গি কি না, তা নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করুক কেন্দ্র। আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠন করার পথে তালিবান। প্রতিবেশী দেশের পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখছে কেন্দ্র? তালিবান কি জঙ্গি হিসেবে দেখছে কেন্দ্র? প্রশ্ন ওমর আবদুল্লার।
কেন্দ্রের তালিবান প্রসঙ্গে এই নীরবতা নিয়ে বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল বিভিন্ন মহলে। ওমর আবদুল্লার দাবি, কেন্দ্র জানাক তারা কী ভাবছে। তালিবান যদি জঙ্গি না হয়, তাহলে রাষ্টপুঞ্জে গিয়ে জঙ্গি সংগঠনের তালিকা থেকে তালিবানের নাম সরানোর পক্ষে সওয়াল করুক কেন্দ্র। তালিবানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিকে সচল করার দাবি করুক। তাদের অন্য চোখে দেখা বন্ধ করা হোক।
ন্যাশনাল কনফারেন্সের বর্ষীয়ান নেতার আরও বক্তব্য, “যদি তা না হয়, যদি তালিবানকে জঙ্গি গোষ্ঠী হিসেবেই মনে করা হয়; তাহলে কেন তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হচ্ছে? সরকার কী চাইছে, তা স্পষ্ট করুক।” উল্লেখ্য, কাতারের ভারতীয় রাষ্ট্রদূত দীপক মিত্তাল সম্প্রতি তালিবানের সঙ্গে কূটনৈতিক বৈঠক করেছেন বলে খবর প্রকাশ্যে এসেছে। দোহায় ভারতীয় দূতাবাসে তালিবান নেতা শের মহম্মদ আব্বাস স্ট্যানিকজ়াইয়ের সঙ্গে দীপক মিত্তাল বৈঠক করেছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। আর তারপরেই জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার পর কাবুলিওয়ালার দেশ এখন পুরোপুরি তালিবানের দখলে। বিমানবন্দর থেকে কাবুলের রাজপথ, চারিদিকে এখন উর্দিহীন বন্দুকধারীদের নজরদারি। যে ছবি সে দেশ থেকে সামনে আসছে, তা অত্যন্ত মর্মস্পর্শী। নিজেদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা করছে আফগানরা। যাঁরা আটকে রয়েছেন, তাঁরা ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে তালিবান। বিশেষ করে যাঁরা তালিবানের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন, বা তালিবান বিরোধী অভিযানে সাহায্য করেছেন, তাঁদের অবস্থা সেদেশে ক্রমেই শোচনীয় হয়ে উঠছে। মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তালিবানের সঙ্গে আগামী দিনে কূটনৈতিক সম্পর্ক কেমন হবে, তার নীল নকশা তৈরি করছে দিল্লি।
ইসলামাবাদ, বেজিং ইতিমধ্যেই তালিবানের প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছে। এখন দিল্লি যদি তালিবানের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক না রেখে চলতে পারে, তাতে আখেড়ে ভারতেরই চাপ বাড়বে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তালিবান-বেজিং-ইসলামাবাদ ত্রিশক্তি জোট তৈরি হয়ে গেলে কাশ্মীর সহ একাধিক ইস্যুতে ভারতের উপর চাপ তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। আরও পড়ুন : আল কায়েদার তালিকায় কাশ্মীর, নাক গলাতে চায় না তালিবান