নয়া দিল্লি: অপেক্ষার অবসান। আজ, ২২ জানুয়ারি উদ্বোধন হতে চলেছে অযোধ্যার রাম মন্দিরের। ইতিমধ্যেই প্রাণ প্রতিষ্ঠার আচার-পর্ব শেষ হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে পৌরহিত্য করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অযোধ্যায় রাম মন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন তিনি। রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে অন্তত ১০,০০০-এর বেশি রাম ভক্ত ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে, বিরোধী নেতাদের অনেকেই এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেলেও, তাঁরা একযোগে জানিয়েছেন, এই অনুষ্ঠানে তাঁরা যোগ দেবেন না। বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার নেতাদর মতে, এই ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’ অনুষ্ঠান আসলে বিজেপি-আরএসএস-এর প্রচার অনুষ্ঠান। নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁরা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ করেছেন। কিন্তু, নরেন্দ্র মোদী যখন রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন, তখন রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, উদ্ধব ঠাকরেরা কে কোথায় থাকবেন? আসুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক –
রাহুল গান্ধী
গত ১৪ জানুয়ারি মণিপুর থেকে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু করেছেন রাহুল গান্ধী। ভারত জোড়ো যাত্রার দ্বিতীয় দফায় বর্তমানে তিনি অসমে আছেন। আজ, ২২ জানুয়ারিও তিনি অসমেই থাকবেন। আজ রাহুল অসমের একটি মন্দির পরিদর্শনে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
অযোধ্যায় যখন রাম মন্দিরের উদ্বোধন হবে, সেই সময় বাংলায় হবে সম্প্রীতি যাত্রা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো জানিয়েছেন, ধর্ম একটি ব্যক্তিগত বিষয়। রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠার দিন, তিনি কালীঘাট মন্দিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। তারপর, সেখান থেকে একটি সম্প্রীতি মিছিল করবেন তিনি। পার্ক সার্কাস ময়দানে মিছিল শেষ হবে। বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ এই মিছিলে অংশ নেবেন। মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বারের মতো ধর্মীয় স্থল ছুঁয়ে যাবে এই মিছিল। পার্র সার্কাসে মিছিল শেষে একটি সভাও করবেন মমতা।
সীতারাম ইয়েচুরি
বিরোধী দলগুলির প্রত্যেকটির মধ্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া-না দেওয়া নিয়ে দোনোমোনো ছিল। এর মধ্যে প্রথম নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছিল সিপিআইএম। গত মাসের শুরুতেই সিপিআইএম-এর সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছিলেন, প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে তাঁরা যোগ দেবেন না। এই ক্ষেত্রে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সীতারাম।
শরদ পওয়ার
রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য রাম মন্দির তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্টের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন শরদ পওয়ার। তিনি সরাসরি এই অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করেননি, তবে, জানিয়েছেন এই অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দেবেন না। পওয়ার বলেছেন তিনি পরে রাম মন্দিরে যাবেন। কারণ, প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর দর্শন পাওয়া সহজ হবে এবং রাম মন্দির নির্মাণও সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।
অখিলেশ যাদব
সমাজবাদী পার্টির প্রধানও জানিয়েছেন, তিনি পরে রাম মন্দির দর্শনে যাবেন। প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন না।
অরবিন্দ কেজরীবাল
আপের জাতীয় আহ্বায়ক তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে অরবিন্দ কেজরীবালকে আমন্ত্রণ জানায়নি রাম মন্দির ট্রাস্ট। বিজেপি বিরোধিতায় তিনি বারবরই সফট হিন্দুত্বের পথে হাঁটেন। এবারও তিনি ২২ জানুয়ারি দিল্লি জুড়ে ‘সুন্দর কাণ্ড’ এবং ‘হনুমান চালিসা’ পাঠের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
উদ্ধব ঠাকরে
রাম মন্দির আন্দোলনকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিলেন বাল ঠাকরে। কিন্তু, প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। শিবসেনা (উদ্ধব) দলের প্রধান জানিয়েছেন, দলের নেতাদের নিয়ে তিনি ২২ জানুয়ারি নাসিকের কালারাম মন্দির পরিদর্শন করবেন। সেখানে তিনি ‘মহা আরতি’ করবেন। মনে করা হয়, বনবাসের সময় সীতা ও লক্ষ্মণের সঙ্গে যে পঞ্চবতী বনে ছিলেন রাম, তা নাসিক এলাকাতেই অবস্থিত ছিল। দিন কয়েক আগে, এই কালারাম মন্দিরে পুজো দেন প্রধানমন্ত্রী মোদীও।
লালুপ্রসাদ যাদব
এর আগে বিহারে লালকৃষ্ণ আদবানির রথ আটকে দিয়েছিলেন লালুপ্রসাদ যাদব। তিনিও জানিয়েছেন রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ছা অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দেবেন না।
ডিএমকে
প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে যাবে না বলে সাফ জানিয়েছে তামিলনাড়ুর ক্ষমতাসীন দল ডিএমকে। উররন্ত, এক আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানকে অপহরণ করার জন্য বিজেপির নিন্দা করেছে তারা।