নয়া দিল্লি : রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকার আনা প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত ছিল ভারত। ইউক্রেনে রাশিয়ার নজরকে প্রথম থেকেই কটাক্ষ করেছে আমেরিকা। এখন রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আমেরিকা গতকাল রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব এনেছিল। এই প্রস্তাবের স্বপক্ষে ভোট দিয়েছে ১১ টি দেশ। এবং কোনও ভোটদান থেকে বিরত ছিল চিন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। এই দিক থেকে চিনের পথেই হেঁটেছে ভারত। আমেরিকার আনা প্রস্তাবকে উপেক্ষা করে ভারত এই প্রস্তাবে কোনও ভোট দেয়নি। এই প্রস্তাবে ভেটো দেয় মস্কো। তবে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের এই অবস্থান সমালোচনা কুড়িয়েছে বিরোধীদের।
এদিকে, রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি ভারতীয় দূত টি এস তিরুমূর্তি ভারতের এই পদক্ষেপের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, “ইউক্রেনের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে ভারত গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।” ভারতের তরফে বলা হয়েছে, “সমস্ত সদস্য রাষ্ট্রের উচিত আন্তর্জাতিক আইন এবং রাষ্ট্রসংঘের সনদের নীতিগুলিকে সম্মান করা, কারণ এটি একটি গঠনমূলক পথের দিকে নিয়ে যায়।” রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের ক্ষেত্রে ভারত তার ধারাবাহিক, অবিচল এবং ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান বজায় রেখেছে। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের কোনও ভোট না দেওয়ায় সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
শিবসেনা নেতা প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী ভোট না করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। অনেকগুলি টুইটে তিনি প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে নিয়ে করা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্যের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি লিখেছেন,”যুদ্ধের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকা আপনার সম্পর্ককে ভালো করে না। বরং হিংসা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আপনার নীতিগুলিকে দুর্বল করে তোলে। আগামিকাল আমরা চিনের বিরুদ্ধে সমর্থন নাও পেতে পারি। আজ আমরা চিনের মতো একই পাশে দাঁড়িয়েছি, যেটি আমাদের বিদেশনীতি সম্পর্কে অনেক কিছু বলে দেয়।” তবে তিনি ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধের জন্য যথেষ্ট কাজ না করার জন্য রাষ্ট্রসংঘ এবং অন্যান্য দেশগুলিরও সমালোচনা করেছিলেন।
তিনি টুইটে আরও লিখেছেন, “মজার বিষয় হল যারা ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেহরুকে গালাগালি ও সমালোচনা বন্ধ করতে পারে না, তাঁরা রাষ্ট্রসংঘে তাদের অবস্থানকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য জোট-নিরপেক্ষ নীতি ব্যবহার করছে। ভন্ডামি কি হাদ সে গুজর্তা হার সরকারি লামহা (আরেক মুহূর্ত যখন সরকার ভন্ডামির সীমা অতিক্রম করেছে)।” কংগ্রেস নেতা শশী থারুরও ভারতের এই অবস্থানের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “ভারত বলছে প্রতিবেশী দেশগুলো দিয়ে ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনবে। কিন্তু ভারতীয় ছাত্ররা কীভাবে সীমান্তে যাবে? রাষ্ট্রসংঘে ভারতের এই অবস্থানের পরে তাঁদের প্রস্থানের সুবিধার্থে বিপর্যস্ত ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যেকোনও সাহায্য আরও অসম্ভাব্য।”
আরও পড়ুন : Russia-Ukraine Conflict : ‘আতঙ্ক’ কাটিয়ে মুখে ‘হাসি’, ভারতে ফিরছেন ২১৯ জন পড়ুয়া