নয়া দিল্লি: বিরোধী-ঐক্য ছাড়া বিজেপিকে ধরাশায়ী করা সম্ভব নয়। সেই লক্ষ্যে বিরোধী-ঐক্য গড়তে মরিয়া একসময়ের এনডিএ শরিক বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা JD(U) প্রধান নীতীশ কুমার। বলা ভাল, বিহারের মাটি থেকেই বিরোধী-ঐক্যের বীজ বপন শুরু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই আগামিকাল বেঙ্গালুরুতে বিরোধী ঐক্যের বৈঠকেও বড় ফ্যাক্টর (Big Factor) হতে চলেছে বিহার (Bihar)। বৈঠকে থাকবেন লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডি-র প্রতিনিধিও। কিন্তু, একদিকে যখন বিহারের প্রধান দুই দল বিরোধী-ঐক্য গড়তে মরিয়া, তখন নীতীশ-রাজ্যের অন্যান্য দলগুলিকে কাছে টেনে বিরোধী-ঐক্যের রাশ দুর্বল করতে আসরে নামছে বিজেপি।
জানা গিয়েছে, বিহারের প্রধান দুই দল JD (U) এবং RJD যেমন বেঙ্গালুরুতে বিরোধী ঐক্যের বৈঠকে যোগ দিতে চলেছে, তখন বিহারের অন্যান্য দলগুলিকে কাছে টানার চেষ্টা করছে বিজেপি। বিহারের মহাদলিত ভোটব্যাঙ্ককে সংহত করাই বিজেপির লক্ষ্য। তাই রামবিলাস পাসওয়ানের দল লোক জনশক্তি পার্টি (LJP), জিতেন রাম মাঝির হিন্দুস্তান আওয়ামী মোর্চা, উপেন্দ্র কুশওয়ার রাষ্ট্রীয় সমতা পার্টি-সহ বিহারের ছোট ৯টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে NDA-র বৈঠকে। যার মধ্যে এলজেপি প্রধান চিরাগ পাসওয়ান, হিন্দুস্তান আওয়ামী মোর্চার জিতেন রাম মাঝি এনডিএ বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে নিশ্চিত। সোমবারই চিরাগ পাসওয়ান দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড অমিত শাহের সঙ্গে দেখাও করেছেন। তবে উপেন্দ্র কুশওয়া এবং বিহারের অন্যান্য দলগুলির প্রতিনিধিরা এনডিএ বৈঠকে থাকবেন নাকি বিরোধী-শিবিরের দিকে ঝুঁকবেন, তা এখনও নিশ্চিত নয়। স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী-জোটের শক্তি অনেকাংশেই বিহারের উপর নির্ভর করছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এদিকে, আগামিকাল বিরোধী-জোটের বৈঠকের আগে এদিন বেঙ্গালুরুর পাঁচতারা হোটেলে নৈশভোজে বসছেন বিরোধীরা। নৈশভোজের আয়োজন করেছেন সনিয়া গান্ধী স্বয়ং। মূলত, মঙ্গলবারের বৈঠকের আলোচনার এজেন্ডার রূপরেখা নিয়েই এদিনের নৈশভোজে আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর। এছাড়া বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে আসন সমঝোতার সম্ভাবনা ও ফর্মুলা নিয়েও প্রাথমিক আলোচনা হবে। বিরোধী জোটের প্রচারের সাধারণ ইস্যু কী হবে, বিরোধী দলগুলি কীভাবে নিয়মিত কাজ করবে, সেগুলিও চূড়ান্ত করা হতে পারে এদিনের নৈশভোজের আলোচনা সভায়। পাশাপাশি বিজেপির দল ভাঙানোর কৌশল বিরোধীদের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। এনসিপি ভাঙনকে ইস্যু করে বিজেপির দল ভাঙানোর কৌশলকে কীভাবে প্রতিহত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে এদিনের নৈশভোজে। উল্লেখ্য, পাটনা বৈঠকে যে দলগুলি যোগ দিয়েছিল, সেগুলি ছাড়া আরও নতুন ৮টি ছোট রাজনৈতিক দল বিরোধী শিবিরে যুক্ত হয়েছে। এবার আগামিকালের বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হয়, সেটাই দেখার।