পটনা: চাকরি তো দূরের কথা, এখনও স্কুলের গণ্ডিও পার করেনি দুইজন। এ দিকে, একজনের ব্য়াঙ্ক অ্যাকাউন্টে (Bank Account) রয়েছে ৬০ কোটি টাকা, অপরজনের অ্যাকাউন্টে ৯০০ কোটি। কীভাবে ওই দুই নাবালকের অ্যাকাউন্টে এত টাকা এল, তা ভেবেই পাচ্ছেন না পরিবার তথা গোটা গ্রামের লোকজনই।
ব্য়াঙ্ক অ্যাকাউন্টে রহস্যজনকভাবে টাকা ঢোকা ঘিরে ফের একবার খবরের শিরোনামে চলে এল বিহার(Bihar)। গতকালই জানা যায়, বিহারের খাগাড়িয়া জেলার এক বাসিন্দার অ্যাকাউন্টে চলতি বছরের মার্চ মাসে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা ঢোকে, যা তিনি ফেরত দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এ বার সেই অঙ্কই লাখের গণ্ডি পার করে কোটিতে পৌঁছল।
গুরুচন্দ্র বিশ্বাস ও অসিত কুমার নামক দুই নাবালকই বিহারের কাটিয়ার জেলার পাসতিয়া গ্রামের বাসিন্দা। বাড়িতে আর্থিক অনটন থাকায় সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে স্কুলের ইউনিফর্ম কেনার জন্য যে টাকা দেওয়া হয়, তার আবেদন জানিয়েছিল তারা। সম্প্রতিই তারা স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া(Central Bank of India)-র সেন্ট্রালাইজ় প্রসেসিং সেন্টারে যায় ইউনিফর্ম কেনার টাকা এসেছে কিনা, তা জানতে। সেখানে তাদের অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স খুলে দেখতেই চক্ষু চড়কগাছ ব্যাঙ্ককর্মীদের।
তারা দেখেন, গুরুচন্দ্র বিশ্বাস নামক ওই কিশোরের অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স দেখাচ্ছে ৬০ কোটি টাকা। অপরজনের অ্যাকাউন্ট চেক করতেই আরও আঁতকে ওঠেন তারা, কারণ অপর কিশোরের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স ৯০০ কোটি টাকা! ব্রাঞ্চ ম্যানেজার গোটা ঘটনায় আশ্চর্য হলেও বুঝতে পারেন কোনও গোলযোগের কারণেই এত পরিমাণ টাকা ওই দুই কিশোরের অ্যাকাউন্টে চলে এসেছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওই দুই অ্যাকাউন্টের লেনদেন বন্ধ করে দেন।
জানা গিয়েছে, দুই কিশোরেরই উত্তর বিহার গ্রামীণ ব্যাঙ্কে (Gramin Bank) অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সুতরাং ওই ব্যাঙ্ক থেকেই কোনও যান্ত্রিক গোলযোগের কারণেই বিপুল পরিমাণ টাকা ঢুকছে। ইতিমধ্যেই ব্য়াঙ্কের শীর্ষ আধিকারিকদের গোটা ঘটনাটি জানানো হয়েছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে।
গতকালই বক্তিয়ারপুরের বাসিন্দা রঞ্জিৎ দাসের ঘটনা সামনে আসে। তাঁর অ্যাকাউন্টেও চলতি বছরের মার্চ মাসে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা এসেছিল। ব্যাঙ্কের তরফে একাধিকবার নোটিস পাঠানো হলেও তিনি কোনও জবাব দেননি। বুধবার তাঁকে গ্রেফতার করা হলে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আমাকে ওই টাকা দিয়েছেন, আমি কেন টাকা ফেরত দেব?”
রঞ্জিৎয়ের দাবি, “চলতি বছরের মার্চ মাসে আমি যখন ওই টাকা পাই, তখন খুব খুশি হয়েছিলাম। প্রথমে কীসের টাকা এসেছে, বুঝতে না পারলেও পরে বুঝতে পারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওই টাকা দিয়েছেন। তিনি কথা দিয়েছিলেন যে সকলের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে পাঠাবেন। আমি ভেবেছি, সেই টাকারই প্রথম কিস্তি পাঠিয়েছেন তিনি। পরেও আবার টাকা আসবে, এই আশাতেই আমি সমস্ত টাকা খরচ করে ফেলি। এখন আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আর কোনও টাকা নেই।”
আরও পড়ুন: দু’দিনের জ্বরেই মৃত্যু হচ্ছে শিশুদের, হাসপাতালে নেই বেডও! ১৫ দিন পরেও অজানা জ্বরে কাঁপছে ফিরোজাবাদ