Cheetah: ১০০ বছর পর দেখা মিলল তার, উধাও কালো দাগ, কী হল ওদের
Cheetah: ১৬০৮ সালে ভারতেই প্রথম সাদা চিতার দেখা মেলে, যার গায়ে ছিল নীল দাগ। তখন সবেমাত্র সিংহাসনে বসেছেন মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গির। আর বিগ ক্যাটদের মধ্যেই পড়ে স্নো লেপার্ড। এরা আফ্রিকান চিতার তুলনায় আকারে ছোট হয়। গায়ের রং সাদা।
কেনিয়া: সম্প্রতি কিছু চিতার ছবি সামনে এসেছে। আফ্রিকান চিতা। কেনিয়ার দক্ষিণাংশে আথি কাপিতি নামে একটা স্যাংচুয়ারিতে ছবিগুলি তোলা হয়েছে। গায় কম্বেস (Guy Combes) নামে এক ব্রিটিশ ফটোগ্রাফার ছবিগুলি তুলেছেন। যাতে সিলমোহর দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাট অ্যালায়েন্স (International Big Cat Alliance)।
ভাল করে দেখুন, চিতার গায়ে যে কালো কালো গোল দাগ থাকে, এদের গায়ে সেটা নেই। এরা হল ‘স্পটলেস চিতা’। শেষবার ১৯২১ সালে তানজানিয়ায় এমন স্পটলেস চিতা দেখা গিয়েছিল। ১০০ বছর পর আবার দেখা মিলল। প্রশ্ন হলো, এই ‘ডিসকভারি’র গুরুত্বটা কোথায়। গুরুত্ব হল, এটা চিতাদের জেনেটিক মিউটেশনের প্রমাণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গা থেকে কালো দাগ উধাও হয়ে যাওয়ায় চিতার সঙ্গে সিংহের তফাত করা যাচ্ছে না। এর ফলে, সিংহের ভিড়ে লুকিয়ে থেকে এদের শিকার করতে সুবিধা হচ্ছে কি না, তা দেখতে হবে। সেটা সত্যি হলে বলতে হবে, চিতাদের Adaptation বা অভিযোজন হচ্ছে। এটা ইতিবাচক দিক। আর আশঙ্কার জায়গা হল, জেনেটিক মিউটেশনের ফলে আফ্রিকান চিতার সামনে কোনও বিপদ আসছে কি না সেটা। ফলে, সবটা নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ২০২২ সালে ভারতে ফিরে আসে চিতা। মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে নামিবিয়া থেকে চিতা আসে।
একসময় দেশীয় রাজারা আর ব্রিটিশ সরকারের উঁচুতলার নানা অফিসাররা শিকার করে করে চিতা শেষ করে দিয়েছিলেনন। ১৯৪৭ সালে মধ্যপ্রদেশের রাজা রামানুজ প্রতাপ সিং দেও ভারতের মাটিতে শেষ চিতা শিকার করেন। ১৯৫২ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ভারতে চিতাকে ‘বিলুপ্ত’ বলে ঘোষণা করে। এই যে চিতার জেনেটিক মিউটেশনের কথা বলা হচ্ছে, আমাদের দেশেই তার সবচেয়ে পুরনো রেকর্ড আছে।
১৬০৮ সালে ভারতেই প্রথম সাদা চিতার দেখা মেলে, যার গায়ে ছিল নীল দাগ। তখন সবেমাত্র সিংহাসনে বসেছেন মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গির। আর বিগ ক্যাটদের মধ্যেই পড়ে স্নো লেপার্ড। এরা আফ্রিকান চিতার তুলনায় আকারে ছোট হয়। গায়ের রং সাদা। ফলে, বরফের মধ্যে ক্যামোফ্লেজে থেকে শিকার ধরায় পটু। বরফে ঢাকা গোটা হিমালয়ান রিজিয়নে স্নো লেপার্ড হল সবচেয়ে বড় প্রিডেটর। এরা অবশ্যই বিরল প্রজাতির প্রাণী। ভারতে মূলত লাদাখ এবং অরুণাচলে এদের দেখতে পাওয়া যায়।
স্নো লেপার্ড হারিয়ে যেতে বসায় ২০০৮ সালে সরকার এদের বাঁচাতে উদ্যোগ নেয়। একাধিক পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। আর তাতে কাজও হয়েছে। এখন অরুণাচল প্রদেশ হল ভারতে তুষার-চিতার সবচেয়ে বড় বাসভূমি। সম্প্রতি, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে ট্র্যাপ ক্যামেরায় সব মিলিয়ে ৩৬টা তুষার-চিতার সন্ধান মিলেছে অরুণাচলে।
বাঘ সংরক্ষণেও ভারতের সাফল্য সারা দুনিয়ায় নজির তৈরি করেছে। তবে ওদের সব বিপদ এখনও যায়নি। বাঘেদের আরও একটু ভাল রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। তৈরি হচ্ছে মেগা টাইগার করিডর।