‘কাগজ ছিঁড়ে ফেলেও কোনও অনুতাপ নেই’, নাম না করে শান্তনু, ডেরেককে নিশানা মোদীর

PM Modi: মঙ্গলবার সকালেই এক বৈঠকে এমন মন্তব্য করেন মোদী। এ দিনই সাইকেল চালিয়ে সংসদে গিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বিরোধীরা।

'কাগজ ছিঁড়ে ফেলেও কোনও অনুতাপ নেই', নাম না করে শান্তনু, ডেরেককে নিশানা মোদীর
সংসদে মোদী (ফাইল ছবি- পিটিআই)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 03, 2021 | 3:12 PM

নয়া দিল্লি: বাদল অধিবেশন এ বার শুরু থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে বিরোধীদের প্রতিবাদে। পেগাসাস, কৃষি বিল, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহ একাধিক ইস্যুতে সরব হয় কংগ্রেস সহ সব বিরোধী দল। এই ইস্যুতে আগেও মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ আরও একবার বিরোধীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন তিনি। আগে তিনি সরাসরি কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছিলেন, আর এ বার নাম করে তুলে আনলেন তৃণমূল সাংসদের প্রসঙ্গ। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের প্রসঙ্গে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যিনি কাগজ ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন, তাঁর কোনও অনুতাপ নেই।’  আজ মঙ্গলবার সকালে বিজেপির একটি বৈঠকে তিনি বলেন, ‘এটা সংদের অপমান, সংবিধানের অপমান, গণতন্ত্রের অপমান, মানুষের অপমান।’

বাদল অধিবেশন চলাকালীন যখন পেগাসাস নিয়ে বিতর্ক চলাকালীন কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর হাত থেকে বিবৃতির কাগজ ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। এ দিন সেই প্রসঙ্গে তুলেই আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বিক্ষোভের জেরে সংসদ উত্তাল হওয়ায় এক সপ্তাহের মধ্যে এই নিয়ে দু’বার বিরোধীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন মোদী। শুধু শান্তনু সেন নয়, আর এক তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েনের বিরুদ্ধেও এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন মোদী। গতকালই একটি টুইটে ডেরেক ও ব্রায়েন বিল পাস করানোকে পাপড়ি চাট তৈরির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। আজকের বৈঠকে সেই প্রসঙ্গও টেনে আনেন মোদী। তিনি বলেন, ‘বিল পাস করানো নিয়ে একজন বর্ষীয়ান সাংসদ অপমানজনক মন্তব্য করেছেন। তৃণমূলের এই সাংসদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীও। তিনি বলেন, ‘আমরা সব বিল নিয়ে আলোচনা করতে রাজি, আমাদের কোনও তাড়া নেই। তৃণমূলের একজন সাংস এ ভাবে সংসদকে অপমান করেছেন, ওনার উচিৎ গোটা দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া।

গত সপ্তাহেও সরাসরি কংগ্রেসের নাম করে দলীয় বৈঠকে বার্তা দেন তিনি। কংগ্রেস অধিবেশনে কোনও কাজ করতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এ দিকে, আজ সকালেই বিরোধীদের নিয়ে একটি বৈঠকে বসেন রাহুল গান্ধী। সেই বৈঠকের পরই পেট্রপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সাইকেল চালিয়ে সংসদে যান বিরোধী সাংসদরা।

এর আগে বিজেপি সাংসদদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, যাতে সত্যিটা মানুষের সামনে তুলে ধরা যায়। বিরোধীদের মুখোশ খুলে দেওয়া যায়। বিভিন্ন ইস্যুতে বারবার লোকসভা, রাজ্যসভা মুলতুবি করে দিতে হয়েছে এ বার। অধিবেশন শুরু হলেই বিরোধীরা যে ভাবে বিক্ষোভ শুরু করেন, তাতে মুলতুবি করে দিতে হয়েছে। যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন প্রধানমন্ত্রী।

শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাও বার্তা দিয়েছিলেন বিরোধীদের। অধ্যক্ষ ওম বিড়লার চেয়ার লক্ষ্য করে কাগজ ছোড়েন বেশ কয়েকজন বিরোধী সাংসদ। তারপরই বিরোধীদের কড়া বার্তা দেন অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। সাংসদদের সেই আচরণকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি। মনে করিয়ে দেন সাংসদরা কয়েক লক্ষ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাই কোনও সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে মেটানো উচিৎ বলেই উল্লেখ করলেন এ দিন। ওম বিড়লা বিরোধীদের উদ্দেশে বলেন, ‘যদি এই চেয়ারের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকে তাহলে সরাসরি আমার চেম্বারে আসুন, এসে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করুন। চেয়ারে পেপার ছোঁড়ার মতো ঘটনা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁর কথায়, ‘এই আচরণ সংসদের নীতি বিরুদ্ধ। এখানে যাঁরা আছেন তাঁরা কয়েক লক্ষ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাঁদের অভাব-অভিযোগ তুলে ধরেন। তাই সংসদের নীতি মেনে চলা ও গৌরব বৃদ্ধি করা তাঁদের কর্তব্য।’ আরও পড়ুন: চিনকে চাপ! দু’মাস ধরে দক্ষিণ চিন সাগরে টহল দেবে ভারতের রণবিজয়, শিবালিক