নয়া দিল্লি: নতুন বছরের প্রথম “মন কি বাত” (Mann Ki Baat) অনুষ্ঠানেই জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী(Mahatma Gandhi)-কে স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। এদিন মন কি বাত অনুষ্ঠানের ৮৫ তম এপিসোডটি আধ ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয় মহাত্মা গান্ধীর ৭৪ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করার জন্য। এদিনের অনুষ্ঠানে একদিকে যেমন প্রধানমন্ত্রী পদ্ম সম্মান প্রাপকদের অভিনন্দন বার্তা জানান, একইসঙ্গে অমর জওয়ান জ্যোতিকে ন্যাশনাল ওয়ার মেমরিয়ালের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার কারণ সম্পর্কেও জানান।
রবিবার অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “আজ আমাদের বাপু মহাত্মা গান্ধীজীর মৃত্যুবার্ষিকী। এই ৩০ জানুয়ারিই আমাদের মনে করায় বাপুর শিক্ষার কথা। কয়েকদিন আগেই আমরা প্রজাতন্ত্র দিবসও উদযাপন করেছি।”
এরপরই তিনি অমর জওয়ান জ্যোতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আমরা দেখেছি ইন্ডিয়া গেটেক কাছে অবস্থিত অমর জওয়ান জ্যোতি ও ন্যাশনাল ওয়ার মেমরিয়ালের চিরশিখা একসঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই আবেগঘন মুহূর্তে বহু শহিদ পরিবার ও দেশবাসীর চোখেই জল এসে গিয়েছিল। বেশ কিছু প্রবীণ ব্যক্তি আমায় চিঠি লিখে জানিয়েছেন যে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে অমর জওয়ান জ্যোতির স্থানান্তকরণ করে শহিদদের প্রতি যথাযোগ্য সম্মান জানানো হয়েছে। আমি সকলকে অনুরোধ করছি, আপনারা সকলে ওয়ার মেমোরিয়াল দর্শন করুন।”
স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে দেশজুড়ে পালন করা হচ্ছে আজাদি কা অমৃত মহোৎসব। এই অনুষ্ঠানের অংশ হিসাবেই প্রধানমন্ত্রী বাল পুরস্কার ও পদ্ম সম্মান ঘোষণা করা হয়েছে, সে কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বহু গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্মান ঘোষণা করা হয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হল প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় বাল পুরস্কার, যা দেশের সেই সমস্ত শিশুকে দেওয়া হয়েছে, যারা অল্প বয়সেই সাহসী ও অনুপ্রেরণামূলক কাজ করেছেন।”
একইভাবে তিনি পদ্ম সম্মান নিয়েও কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই বছরে দেশের পদ্ম সম্মানও ঘোষণা করা হয়েছে। পুরস্কার প্রাপকদের তালিকায় এমন অনেকেই রয়েছেন, যাদের সম্পর্কে খুব অল্প সংখ্যক মানুষই জানেন। ওনারা হলেন আমাদের দেশের এমন হিরো, যারা সুখ্যাতি থেকে অনেক দূরে রয়েছেন। অতি সাধারণ পরিবেশে থেকেও অসাধারণ কর্মকাণ্ডের জন্যই তাঁদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।”
মন কি বাত অনুষ্ঠানে শুধু নিজেরই নয়, দেশবাসীর মনের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এদিনের অনুষ্ঠানে নমো জানান, দেশ-বিদেশজুড়ে প্রায় ১ কোটিরও বেশি শিশু তাদের “মন কি বাত” জানিয়েছে পোস্টকার্ড পাঠিয়ে। তিনি বলেন, “প্রায় ১ কোটিরও বেশি ওই পোস্টকার্ডগুলির মধ্যে আমি অনেকগুলিই পড়েছি। এই পোস্টকার্ডগুলি আমাদের দেশের নতুন প্রজন্মের চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভঙ্গিকে তুলে ধরেছে, যারা আগামিদিনে আমাদের দেশ গড়বে। আর দেশের ভবিষ্যতের জন্য আজকের প্রজন্মের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।”
দেশের করোনা পরিস্থিতি ও টিকাকরণ কর্মসূচি নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানান, করোনার নতুন ঢেউয়ের সঙ্গে দারুণ সাফল্য়ের সঙ্গে লড়াই করেছে দেশ। ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীরাও যেভাবে এগিয়ে এসে টিকা গ্রহণ করেছে, তা প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, “এটা গর্বের বিষয় যে প্রায় সাড়ে চার কোটি কিশের-কিশোরী ইতিমধ্য়েই করোনা টিকা নিয়েছে। আনমাদের দেশে তৈরি ভ্যাকসিনের উপর সাধারণ মানুষের যে ভরসাই শক্তি জোগায়। বর্তমানে দেশে করোনা সংক্রমণও কমছে। এটা ইতিবাচক সংকেত।”
দুর্নীতি নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “দুর্নীতি হল উইপোকার মতো, যা দেশকে ভিতর থেকে ঝাঝরা করে দেয়। সমস্ত দেশবাসীকে মিলিতভাবে এই সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য় প্রচেষ্টা চালাতে হবে। যেখানে কর্তব্যবোধ রয়েছে, সেখানে দুর্নীতি প্রবেশের কথাও ভাবতে পারে না।”