নয়া দিল্লি : দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে স্বনির্ভর (Self Reliant Defence Sector) করে তুলতে হবে। শনিবার এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। রাশিয়া – ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia – Ukraine War) আবহে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে শনিবার এক উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর সহ অন্যান্যরা। এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, তিন সেনার প্রধান এবং সরকারের অন্যান্য শীর্ষ আধিকারিকরাও ছিলেন বৈঠকে।
বৈঠকে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের যাবতীয় খুঁটিনাটি নিয়ে খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অপারেশন গঙ্গার মাধ্যমে ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের এবং সেই সঙ্গে প্রতিবেশী কিছু দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া সম্পর্কেও খোঁজ নেন প্রধানমন্ত্রী। এর পাশাপাশি দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কতটা মজবুত রয়েছে এবং বায়ুসেনা ও নৌসেনার ক্ষেত্রে কতটা প্রস্তুতি রয়েছে… সেই সব পর্যালোচনা করা হয় শনিবারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে।
ইউক্রেনের খারকিভে নিহত নবীন শেখারাপ্পাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় সবরকম ব্যবস্থা নিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে দেশকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে স্বনির্ভর করে তোলার উপরেও জোর দেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর মতে, এতে যে কেবল দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র শক্তিশালী হবে তাই নয়, এর পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতেও গতি আসবে। বৈঠক সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সূত্র মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে বৃহস্পতিবার বিজেপির চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ব্যাপক জয়ের পর নরেন্দ্র মোদী দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বার্তায় বলেছিলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের উভয়ের সঙ্গেও ভারতের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু ভারত শান্তির পক্ষে এবং আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছেন তিনি। মোদী বলেছিলেন, “যে দেশগুলি যুদ্ধ জড়িয়ে রয়েছে, তাদের উভয়ের সঙ্গেই ভারতের যোগ রয়েছে। আর্থিক, নিরাপত্তা, শিক্ষা এবং রাজনৈতিক – সব ক্ষেত্রেই যোগ রয়েছে। ভারতের বেশ কিছু প্রয়োজন জড়িয়ে রয়েছে এই দেশগুলির সঙ্গে।” সেই সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেছিলেন, “রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে এই যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রভাব বিশ্বের প্রায় প্রত্যেক দেশেই পড়েছে। ভারত শান্তির পক্ষে এবং আশা করে আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান হবে।”
ভারত সরকার ১৮ হাজারেরও বেশি ভারতীয় নাগরিককে ইউক্রেন থেকে উদ্ধার করেছে। গত সপ্তাহেই অপারেশন গঙ্গা শেষ হয়েছে। সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এর পাশাপাশি জেনেভা ও ইউক্রেনে রেড ক্রসের সঙ্গেও ভারত সরকার যোগাযোগ করেছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে পড়ুয়াদের উদ্ধার করার জন্য।