তিরুবনন্তপুরম: কয়েকজন পুলিশ কর্তা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে, এমনকি, তাঁর মেয়েকে গালিগালাজ করেছে। এই অভিযোগে কেরল হাইকোর্টে ওই পুলিশকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছিলেন এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর), সেই মামলার রায় দানের সময় আদালত পর্যবেক্ষণ করল, যতক্ষণ না পুলিশ আধিকারিকরা সাধারণ নাগরিকদের তাদের প্রভু হিসাবে স্বীকৃতি দিচ্ছে এবং তাদের কাজের মধ্যে একটি সামাজিক প্রতিশ্রুতি আছে বলে মানছে, ততক্ষণ পর্যন্ত পুলিশ আধিকারিকদের আচার-আচরণের সংস্কার সাধন সম্ভব নয়। বিচারপতি দেবন রামচন্দ্রনের এক বিচারপতির বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, শুধুমাত্র আদেশ দিয়ে কিংবা বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুলিশ প্রশাসনের কর্মপদ্ধতি পাল্টানো যাবে না।
বিচারপতি রামচন্দ্রন বলেছেন, “নাগরিকরা তাদের প্রভু এবং কাজের ক্ষেত্রে তাদের সামাজিক প্রতিশ্রুতি আছে – এটা পুলিশ কর্মকর্তারা মেনে না নেওয়া পর্যন্ত প্রকৃত পরিবর্তন সম্ভব নয়। শুধুমাত্র আদেশ বা বিজ্ঞপ্তি জারি করলে আসল উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। আধিকারিকদের বোঝাতে হবে যে তাদের কার্যকলাপে, বিশেষ করে তাদের কর্তব্যের বাইরে, দুর্ব্যবহার এবং হিংসা সহ্য করা হবে না এবং সভ্য সংস্কৃতিতে এটা মেনে নেওয়া যায় না।”
নাগরিকদের সম্বোধন করার সময় অবমাননাকর শব্দ ব্যবহার করার জন্য পুলিশ বাহিনীকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে আদালত। আদালতের রায় শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত কর্তাদের বিরুদ্ধেই গিয়েছে। কেরলের পুলিশ প্রধানকে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, সমস্ত পুলিশ কর্তা যাতে নাগরিকদের প্রাপ্য সম্মান দেন, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে। এই বিষয়ে পুলিশ প্রধান কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন, সেই বিষয়ে একটি প্রতিবেদনও দাখিল করতে হবে।
বিচারপতি রামচন্দ্রনের মতে অধিকাংশ পুলিশ কর্তা ‘ক্ষমতা উপভোগ’ করতে গিয়ে, জনগণ যে তাদের উপর নির্ভর করে, এই সত্যটিই ভুলে যায়। তাদের মধ্যে একটা দায়মুক্তির বোধ কাজ করে। তিনি বলেন, “পুলিশের সংস্কৃতিতে অবশ্যই পরিবর্তন আনতে হবে। এই আদালতের আদেশ এবং রায় সেই পরিবর্তন শুরুর একটি ধাপ মাত্র। অর্থপূর্ণভাবে এবং কার্যকর পরিবর্তন পুলিশ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষকেই করতে হবে।”