নয়া দিল্লি: দীর্ঘদিনের টালবাহানা, শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পরও নাটকীয়ভাবে কংগ্রেসে যোগদানের সিদ্ধান্ত থেকে পিছনে সরে আসেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। বেশ কয়েকদিন ধরেই জল্পনা চলছিল, আইপ্যাকের প্রাক্তন কর্ণধার দ্রুত নতুন দল ঘোষণা করে রাজনীতির ময়দানে পা রাখবেন। কিন্তু আপাতত সেই জল্পনায় জল ঢেলে দিলেন স্বয়ং পিকে। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানিয়ে দিলেন এই মুহূর্তে তিনি কোনও রাজনৈতিক দল তৈরি করছেন না। কিন্তু রাজনৈতিক দল তৈরি না করলেও বিহারের মাটি থেকে নয়া রাজনৈতিক কর্মসূচির দিনক্ষণ ঘোষণা করেছেন পিকে। তিনি জানিয়েছেন, বিহারকে তুলে ধরার জন্য ২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন থেকে ‘জন সূরজ’ (হিন্দিতে ‘জন সুরজ’) পদযাত্রার ডাক দিয়েছেন। এই পদযাত্রার মাধ্যমে বিহারে নির্বাচনী প্রচারের কাজ হবে বলেও জানিয়েছেন ভোটকুশলী। তিনি বলেন, “আমি আগামী ২ অক্টোবর পশ্চিম চম্পারণেক গান্ধী আশ্রম থেকে ৩ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ পদযাত্রা শুরু করব। গোটা বিহার ঘুরার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এই পদযাত্রার নির্ধারিত হয়েছে। আমরা মানুষের বাড়ি, অফিসে গিয়ে তাদের থেকে সমস্যা ও প্রত্যাশার কথা জানার চেষ্টা করব।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পিকে স্পষ্টতই জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তিনি কোনও রাজনৈতিক দল তৈরি করছেন না। তিনি বলেন, “বিহারের সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এমন ১৭ থেকে ১৮ হাজার মানুষের সঙ্গে আমি কথা বলব এবং তাদেরকে একত্রিত করার চেষ্টা করব। অগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্য এই প্রক্রিয়া শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। বিহারের মানুষ যদি মনে করেন, তাদের দাবি পূরণের জন্য কোনও রাজনৈতিক মঞ্চ প্রয়োজন, তখনই আমরা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। দল তৈরি হলে সেটা প্রশান্ত কিশোরের নয়, মানুষের দল হবে।”
প্রসঙ্গত, কংগ্রেসে যোগদান পর্ব নিয়ে যাবতীয় জল্পনা শেষ হওয়ার পরই সোমবার একটি ইঙ্গিতপূর্ণ টুইট করেন প্রশান্ত। সেই টুইট প্রশান্তের দল তৈরির জল্পনা আরও জোরাল করেছিল। টুইটে তিনি লিখেছিলেন, “গণতন্ত্রে অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণকারী হতে এবং জনগণের পক্ষে নীতি নির্ধারণে সহায়তা করার জন্যই আমি ১০ বছর কাজ করেছি। জনগণই আসল মালিক, জনগণকে সুশাসন দেওয়ার রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে। বিহার থেকেই এর সূচনা হবে। আগামী দিনে প্রশান্ত যদি কোনও রাজনৈতিক দল তৈরি করেন, তবে তা নীতীশের জেডিইউ বা লালু প্রসাদের আরজেডির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।