গুরুগ্রাম: মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের শুক্রবারের নমাজ খোলা জায়গায় পড়া উচিৎ নয়। শুক্রবার এমনটাই জানালের হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। ২০১৮ সালে নমাজ পড়া নিয়ে সংঘর্ষের কারণে নমাজের জন্য নির্ধারিত স্থানের অনুমতি দিয়েছিল প্রশাসন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী খট্টরের মন্তব্য থেকে স্পষ্ট আগের অবস্থান থেকে সরকার সরে আসার সম্ভাবনা প্রবল।
দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের আবহে খট্টরের এই মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গুরগাঁও প্রশাসন দুপক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধান’ খুঁজে বের করবে এবং তাতে কারও অধিকারই খর্ব করা হবে না। স্থায়ী সমাধান বের হওয়া অবধি সকলের উচিৎ নিজেদের বাড়িতে বা ধর্মীয় স্থানে প্রার্থনা করা, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী খট্টর। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় খট্টর বলেন, “আমি পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা হবে। ধর্মীয় স্থানে কেউ প্রার্থনা করলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। ধর্মীয় স্থান প্রার্থনার জন্যই তৈরি। কিন্তু খোলা স্থানে এই কাজ করা উচিৎ নয়। স্থায়ী সমধান না হওয়া অবধি আমরা এই ধরনের কার্যকলাপ বরদাস্ত করব না।”
সরকারি জমিতে নমাজ পাঠ নিয়ে দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন গুলির প্রতিবাদে গতমাসেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। কয়েকটি নমাজের স্থানে গোবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। মুসলিমদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলাকালীন ‘জয় শ্রীরাম স্লোগান’ দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল।
আগেই নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে, আটটি জায়গায় নমাজের অনুমতি বাতিল করেছিল গুরুগ্রাম প্রশাসন (Gurgaon Administration)। জানা গিয়েছিল, গুরুগ্রামে নমাজ পড়ার জন্য মোট ৩৭ টি নির্দিষ্ট জায়াগা ছিল। তারমধ্যে থেকেই আটটি জায়গায় নমাজপাঠের অনুমতি বাতিল করা হয়েছিল। প্রশাসন জানিয়েছিল ওই আটটি জায়গায় নমাজ পড়া নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসন জানিয়েছিল, জায়গা গুলি ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছিল না, সাধারণের ব্যবহারের জন্যই জায়গাগুলি নির্দিষ্ট ছিল। তাই অভিযোগ পেয়ে পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছিল, বাকি জায়গা গুলি নিয়েও যদি স্থানীয়দের অভিযোগ আসে তবে সেক্ষেত্রেও অনুমতি বাতিল করা হবে। গুরুগ্রাম প্রশাসনের যুক্তি ছিল, জনসাধারণ ব্যবহার করে এমন কোনও খোলা জায়গাতে নমাজ পড়তে হলে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া একান্তই প্রয়োজনীয়। তাই প্রশাসনের এক্তিয়ার আছে অনুমতি দেওয়া বা বাতিল করার।