নয়া দিল্লি: রাজধানীতে আজ সব নজর বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের দিকে। আজ বৈঠকে বিজেপি নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, মোদী সরকারের বিভিন্ন কৃতিত্বগুলির কথা তুলে ধরেন। তাঁর বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদীর সরকার ভারতের ভাবমূর্তি গোটা বিশ্বের সামনে উজ্জ্বল করার চেষ্টা করছে। আর বিরোধীরা সেই ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে। নির্মলা সীতরমন বলেন, “যখন ভারত সারা বিশ্বে টিকাদান কর্মসূচির জন্য প্রশংসিত হচ্ছে, তখন শুরু থেকেই বিরোধীরা করোনা টিকা নিয়ে সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা করেছে।”
সম্প্রতি ১০০ কোটির টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা পার করেছে ভারত। আজ সেই প্রসঙ্গও উঠে আসে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর গলায়। তাঁর মতে, ১০০ কোটি টিকাকরণ সম্পূর্ণ করতে ভারত একটি সুশৃঙ্খল এবং পদ্ধতিগত পথ নিয়ে এগিয়েছে। আর সেই কারণেই এই সাফল্য। দেশের করোনা টিকাকরণে গতি আনতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে উন্নত করতে কেন্দ্রীয় বাজেটে যে ৩৬ হাজার কোটি টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেই কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায়, সেনাবাহিনী এবং সৈনিক স্কুলগুলিতে মহিলাদের সুযোগ করে দেওয়াটাও এই সুশৃঙ্খল চিন্তাধারারই ফল বলে মনে করছেন নির্মলা সীতারমন। মহিলাদের সামনে থেকে রেখে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়াই যে কেন্দ্রের লক্ষ্য, সেই কথা আজ আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
আজকের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে বেশ কয়েকজন নেতা টিকাকরণের সংখ্যা এবং প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যান যোজনার আওতায় দেশব্যাপী দরিদ্র মানুষদের বিনামূল্যে রেশন বণ্টনের প্রসঙ্গে কথা বলেন। নির্মলা সীতারমন বলেন, ” কেন্দ্র প্রতিটি জীবনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে। বিগত আট মাসে ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হয়েছে। আর এতে ‘এক দেশ, এক রেশন কার্ড’-এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি। উল্লেখ্য, এই এক দেশ এক রেশন কার্ডের আওতায় দেশের পরিযায়ী শ্রমিকরা যেখানে কাজ করেন, সেখান থেকেই রেশন তুলতে পারছেন। যদি তাঁদের নাম সেই এলাকায় নথিভুক্ত নাও হয়ে থাকে, তাতেও রেশন পেতে কোনও সমস্যা হয় না।
নির্মলা সীতরমন জানিয়েছেন, কেন্দ্র এক দুর্নীতি মুক্ত সরকার চালাচ্ছে দেশবাসীর জন্য। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার মাধ্যমে গোটা পরিকাঠামো ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “ভারত এক বিশাল পরিবর্তনের দিকে এগোচ্ছে এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়া তাতে আরও বেশি গতি আনবে।” মেক ইন ইন্ডিয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশন এবং আত্মনির্ভর ভারতের হাত ধরে দেশকে আরও মজবুত করবে বলেই মনে করছেন তিনি।
উল্লেখ্য, বিজেপির এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কারণ আগামী বছরই উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব সহ মোট ৫টি রাজ্য়ে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। এরমধ্যে পাখির চোখ করা হয়েছে উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনকে, কারণ এই নির্বাচনের ফল দিয়েই ২০২৩ সালের লোকসভা নির্বাচনের গতিপ্রকৃতিও আন্দাজ করা যাবে। প্রথমে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও, এই বৈঠকের গুরুত্ব বুঝেই দিল্লিতে উপস্থিত হয়েছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও।