নয়াদিল্লি: সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে দুটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। দুটি আসনেই জয়ী হন। কোন আসনের সাংসদ থাকবেন রাহুল গান্ধী? গত কয়েকদিন ধরেই জল্পনা চলছিল। অবশেষে রাহুলের সিদ্ধান্তের কথা জানাল কংগ্রেস। কেরলের ওয়েনাড আসনটি ছেড়ে দিচ্ছেন তিনি। রাহুলের ছেড়ে দেওয়া আসনে কাকে প্রার্থী করবে কংগ্রেস? সেই জল্পনারও অবসান হল সোমবার। রাহুল নিজেই জানিয়ে দিলেন, তাঁর ছেড়ে দেওয়া ওয়েনাড আসন থেকে কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তাঁর বোন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা।
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে দুটি লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন রাহুল। কেরলের ওয়েনাড ও উত্তর প্রদেশের রায়বরেলি। দুটি আসনেই বিপুল ভোট পেয়ে জয়ী হন তিনি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও দুটি আসনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ওয়েনাড ও আমেঠি। ২০০৪ সাল থেকে আমেঠির সাংসদ ছিলেন তিনি। কিন্তু, উনিশের নির্বাচনে বিজেপির স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে যান। সেইসময় তাঁর ‘মান’ বাঁচিয়েছিল ওয়েনাড। কেরলের এই আসন থেকে জিতেই সংসদে ফের পা রাখেন তিনি।
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে প্রথমে ওয়েনাড থেকেই মনোনয়ন জমা দেন তিনি। সেইসময় রায়বরেলি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি কংগ্রেস। ওয়েনাডের ভোটগ্রহণ হওয়ার পর রায়বরেলিতে প্রার্থী হিসেবে রাহুলের নাম ঘোষণা করা হয়। এই নিয়ে প্রশ্নও ওঠে। রাহুলকে কটাক্ষ করে বিজেপি নেতৃত্ব বলে, রাহুল দুটি আসনে প্রার্থী হতেই পারেন। কিন্তু, তিনি ওয়েনাডের ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত রায়বরেলি থেকে প্রার্থী হওয়ার কথা জানাননি। ফলে একপ্রকার ওয়েনাডবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন রাহুল।
ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, দুটি আসনেই বিপুল ভোটে জয়ী হন রাহুল। রায়বরেলি কংগ্রেসের গড় হিসেবে পরিচিত। সনিয়া গান্ধী এই কেন্দ্রের দীর্ঘদিনের সাংসদ। এবার তিনি প্রার্থী হননি। লোকসভা ভোটের আগেই কংগ্রেসের টিকিটে রাজ্যসভার সাংসদ হয়েছেন। মায়ের ছেড়ে যাওয়া আসনই ধরে রাখলেন রাহুল। আর উনিশে যে আসন তাঁর ‘মান’ বাঁচিয়েছিল, সেই ওয়েনাড ছেড়ে দিলেন।
সোমবার মল্লিকার্জুন খাড়্গের বাসভবনে বৈঠকে বসেছিলেন কংগ্রেস নেতারা। নিয়ম অনুযায়ী, লোকসভার ফল ঘোষণার ১৪ দিনের মধ্যে একটি আসন ছাড়তে হত রাহুলকে। বৈঠক শেষে কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকর্জুন খাড়্গে এদিন জানান, ওয়েনাড আসনটি ছেড়ে দিচ্ছেন রাহুল।
রাহুল ওয়েনাড ছাড়লে সেখানে প্রিয়ঙ্কাকে প্রার্থী করার দাবি আগেই উঠেছিল। বাস্তবে তাই হল। ওয়েনাডে প্রিয়াঙ্কার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা জানিয়ে রাহুল বলেন, ওয়েনাড ও রায়বরেলি এবার দু’জন সাংসদ পেতে চলেছে। অন্যদিকে, প্রিয়ঙ্কা বলেন, “ওয়েনাডবাসীকে রাহুলের অভাব অনুভব করতে দেব না।” ওয়েনাডে উপনির্বাচনের ফল কী হবে, তা ভবিষ্যতের গর্ভে। ওয়েনাড ছেড়ে রাহুল তাঁর বোনকে ‘গিফট’ দিলেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে। তবে প্রিয়ঙ্কা জিতলে ভাই-বোনকে একসঙ্গে দেখা যাবে সংসদে।