ওয়ানাড়: সংসদে ‘রি-এন্ট্রি’-র পরই মণিপুর (Manipur) ইস্যুতে সরব হয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। মণিপুর ও ভারতমাতাকে ‘হত্যা করা হয়েছে’ বলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন। যা নিয়ে উত্তাল হয় লোকসভা। তাঁর সংসদীয় ভাষণ থেকে এই মন্তব্য ছেঁটেও দেওয়া হয়। কিন্তু, তারপরেও দমেননি কংগ্রেস নেতা (Rahul Gandhi)। এবার নিজের সাংসদ কেন্দ্র ওয়ানাড়ে (Wanad) গিয়েও মণিপুর ইস্যুতে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন রাহুল। মণিপুরে গিয়ে যা দেখেছেন, ১৯ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কখনও তিনি সেরকম অভিজ্ঞতার সাক্ষী হননি বলে জানান রাহুল গান্ধী। একইসঙ্গে বিজেপির আনা পরিবারতন্ত্রের অভিযোগেরও এদিন পাল্টা জবাব দেন কংগ্রেস সাংসদ।
গত বুধবার সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের ভাষণে মণিপুরের অসহায় মহিলা, অসহায় মায়েদের কথা তুলে ধরেছিলেন রাহুল গান্ধী। এদিন ওয়ানাড়েও তাঁর গলায় সেই আবেগপ্রবণ সুর শোনা যায়। মায়ের চোখের সামনে সন্তানের নৃশংস হত্যার কথা তুলে ধরে ওয়ামনাড়ের সাংসদ বলেন, “সেখানে সব জায়গায় শুধু রক্ত, সব জায়গায় হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ চলছে।” অথচ সেই মণিপুর ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অনাস্থা প্রস্তাবের পাল্টা ২ ঘণ্টা ১৩ মিনিটের জবাবী ভাষণের মাত্র ২ মিনিট মণিপুর নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন বলে কটাক্ষ করেন রাহুল গান্ধী।
মণিপুরের হাজার-হাজার মানুষ অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে বলে এদিন ওয়ানাড়ে সরব হন রাহুল গান্ধী। অথচ সংসদে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এই বিষয়ে ঠিকমতো আলোচনা করছেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। মণিপুরের হিংসা, ধর্ষণ ও রক্তক্ষরণের নিন্দা করে কংগ্রেস সাংসদ বলেন, এই ধরনের ঘটনা শান্তি ও ভালবাসার প্রতিনিধিত্বকারী ভারতের ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই ঘটনায় বিজেপিকে দায়ী করে রাহুল গান্ধী আরও বলেন, “বিজেপি ভেবেছে তারা মণিপুরকে ধ্বংস করে দেবে। আমরা একসঙ্গে মণিপুরকে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনব। আমরা ৫ বছর সময় নেব এবং মণিপুরে ভালবাসা ফিরিয়ে দেব। এটা বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যেকার লড়াই।” অর্থাৎ এদিন ওয়ানাড়ে মণিপুর ইস্যুতে কংগ্রেস সাংসদ পরোক্ষে এনডিএ-বিরোধী জোটকে ভোট দেওয়ার একপ্রস্থ প্রচার সাড়লেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের জবাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্র নিয়েও অভিযোগ তোলেন। এদিন ওয়ানাড় থেকে তার জবাব দেন রাহুল গান্ধী। তাঁর পাল্টা তোপ, “বিজেপি এবং আরএসএস আদতে বোঝে না পরিবার কী হয়। তারা বুঝতে পারে না যে তারা যত বেশি তোমাকে এবং আমাকে আলাদা করার চেষ্টা করবে, আমরা ততই ঘনিষ্ঠ হব। তারা মনে করে রাহুল গান্ধীকে অযোগ্য ঘোষণা করলে ওয়ানাড়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভেঙে যাবে। আসলে রাহুল গান্ধীকে অযোগ্য ঘোষণা করলে ওয়ানাড়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।”