নয়া দিল্লি: রাজপথ ছেড়ে এবার রেললাইনে বসলেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। বৃহস্পতিবার কৃষি আইনের প্রতিবাদে “রেল রোকো” (Rail Roko) অভিযানের ডাক দিয়েছিল আন্দোলনকারী কৃষক সংগঠনগুলি। অধিকাংশ জায়গাতেই পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশে কার্যত স্তব্ধ হয়ে রয়েছে রেল পরিষেবা। প্রভাব পড়েছে রাজ্যেও।
কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা আজ দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৪টে অবধি রেল রোকো অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। কৃষক নেতা রাকেশ তিকাইত সকালেই জানিয়েছিলেন, “শান্তিপূর্ণভাবেই এই আন্দোলন করা হবে। যাত্রীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য যাত্রীদের জল, দুধ, লস্যি ও ফল দেওয়া হবে। আমরা তাঁদের কাছে নিজেদের সমস্যা ও দাবির কথা তুলে ধরবো। এরসঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই।”
প্রজাতন্ত্র দিবসে বিশৃঙ্খলার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রশাসন। সেই কারণেই গতকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন রেলস্টেশন নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে গাজিয়াবাদ সীমান্তেও। বিশৃঙ্খলা এড়াতে সকাল থেকেই বিভিন্ন রুটের রেল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দশম-দ্বাদশের পরীক্ষার্থীদের মনোবল বাড়াতে এবার অনলাইনেই প্রধানমন্ত্রীর ‘পরীক্ষা পে চর্চা’
দুপুর ১২টায় রেল রোকো কর্মসূচি শুরু হতেই হরিয়ানার সোনিপত, অম্বালা ও জিন্দ জেলার স্টেশনগুলি সম্পূর্ণভাবে আটকে দেয় কৃষকরা। অম্বালা, কুরুক্ষেত্র, পানিপত, পাঞ্চকুলা ও ফতেহাবাদের বিভিন্ন রেললাইনে বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে, পঞ্জাবেও দিল্লি-হরিয়ানা-অমৃতসর রেলওয়ে রুটে আন্দোলনকারীরা রেললাইনে বসে পড়েন। জলন্ধর ক্যান্টনমেন্ট-জম্মু রেলপথও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তবে বেঙ্গালুরুতে আন্দোলনকারী কৃষকদের অবরোধ করতে বাধা দেওয়ায় পুলিশের সঙ্গে বাক-বিতন্ডা শুরু হয়। একজন কৃষক নেতা বলেন, “পুলিশ আমাদের রেল রোকো কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। তাঁরা বলছেন যে আন্দোলনের জন্য কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। কৃষক সংগঠনগুলির তরফ থেকে গোটা দেশজুড়েই রেল রোকো অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল, তবে আলাদাভাবে পুলিশের থেকে অনুমতি কেন নিতে হবে?”
বিহারেও জন অধিকার পার্টি (লোকতান্ত্রিক)-র কর্মীরা কৃষি আইনের প্রতিবাদে রেললাইনে শুয়ে পড়েন। জম্মু-কাশ্মীরের কৃষকরাও ইউনাইটেড কিষাণ ফ্রন্টের নেতৃত্বাধীনে রেল অবরোধ করেন। রাজ্যের মধ্যেও নিউ আলিপুরদুয়ার, ফালাকাটা, কামাখ্যাগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জংশনে কৃষি আইনের প্রতিবাদে রেল অবরোধ করা হয়। এর জেরে একাধিক ট্রেন দেরীতে ছাড়ে।
আরও পড়ুন: কেরল দখলে বিজেপির তুরুপের তাস ‘মেট্রো ম্যান’, যোগদান ‘বিজয় যাত্রা’য়