নয়া দিল্লি: বাজার থেকে তুলে নেওয়া হবে ২০০০ টাকার নোট। শুক্রবার (১৯ মে) বড় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে, ২০০০ টাকার নোট প্রত্যাহার করা হলেও, এখনই এই নোটকে অচল বলে ঘোষণা করা হচ্ছে না। কাজেই আপনার কাছে যদি ২০০০ টাকার নোট থেকে থাকে, সেই ক্ষেত্রে চিন্তার কিছু নেই। আরবিআই জানিয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওই নোট ব্যাঙ্কে জমা দিতে হবে। তবে, ২০০০ টাকার নোট আর নতুন করে ছাপা হবে না এবং ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তা বাজার থেকে তুলে নেওয়া হবে। তারপরও অবশ্য ২০০০ টাকার নোট দিয়ে বৈধ লেনদেন করা যাবে। দীর্ঘদিন ধরেই এটিএম বা ব্যাঙ্কে ২০০০ টাকার নোট দেখা যায় না। এবার সরকারিভাবে এই নোট প্রত্যাহার করা হল। ২০১৬ সালে ৮ নভেম্বর জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে পুরোনো ৫০০ টাকা এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করে, নতুন ৫০০ টাকার নোট এবং ২০০০ টাকার নোট চালু করা হয়েছিল। বর্তমানে ২০০০ টাকার নোটই ভারতের সবথেকে বেশি মূল্যের মুদ্রা নোট।
আরবিআই জানিয়েছে, ২০০০ টাকার নোট প্রত্যাহার করায় সাধারণ মানুষের বিশেষ অসুবিধা হবে না। কারণ, জনসাধারণের মুদ্রার প্রয়োজন মেটাতে অন্যান্য মূল্যের ব্যাঙ্কনোটগুলি রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। তাছাড়া, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের “ক্লিন নোট পলিসি” অনুসরণ করছে বলে ২০০০ টাকার মূল্যের ব্যাঙ্কনোটগুলি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আরবিআই আরও জানিয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সাধারণ মানুষ তাঁদের কাছে থাকা ২০০০ টাকার ব্যাঙ্কনোটগুলি নিজ নিজ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করতে পারবেন। এছাড়া, যে কোনও ব্যাঙ্কের শাখায় ২০০০ টাকার নোট জমা দিয়ে বিনিময়ে অন্যান্য মূল্যের ব্যাঙ্কনোটগুলি সংগ্রহ করতে পারবেন। ২০০০ টাকার নোট জমা করার ক্ষেত্রে কোও সীমাবদ্ধতা রাখা হয়নি। অর্থাৎ, যত খুশি ২০০০ টাকার নোট জমা করতে পারবেন গ্রাহকরা। অপারেশনাল সুবিধা এবং ব্যাঙ্কগুলির নিয়মিত কার্যক্রমের ব্যাঘাত এড়াতে, ২৩ মে থেকে ২০০০ টাকার ব্যাঙ্কনোটগুলি বিনিময় করা শুরু হবে।
আরবিআই-এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অন্যান্য মূল্যের ব্যাঙ্কনোট পর্যাপ্ত পরিমাণে উপলব্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ২০০০ টাকার ব্যাঙ্ক নোট চালু করার উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে। ২০১৮-১৯ সালেই ২০০০ টাকার নোট ছাপা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ২০০০ টাকা নোটের প্রায় ৮৯ শতাংশ ২০১৭ সালের মার্চের আগে ছাড়া হয়েছিল। তাদের আনুমানিক আয়ু ৪ থেকে ৫ বছর, কাজেই এই নোটগুলি তাদের আয়ুষ্কালের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ বাজারে সবথেকে বেশি ২০০০ টাকার নোট প্রচলিত ছিল। সেই সময় বাজারে চালু ২০০০ টাকার নোটগুলির সামগ্রিক মূল্য ছিল ৬.৭৩ লক্ষ কোটি টাকা। তা থেকে কমে ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ চালু থাকা ২০০০ টাকার নোটগুলির মোট মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩.৬২ লক্ষ কোটি টাকায়। বাজারে চালু সমস্ত ব্যাঙ্কনোটগুলির মাত্র ১০.৮ শতাংশ হল ২০০০ টাকার নোট। দেখা গিয়েছে যে ২০০০ টাকার নোট, সাধারণত লেনদেনের জন্য ব্যবহার করা হয় না।”