নয়া দিল্লি : রাত পোহালের দেশের ৭৩ তম প্রজাতন্ত্র দিবস (Republic Day)। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ (President Ramnath Kovind)। দেশবাসী প্রজাতন্ত্র দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাতে, রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ এই মুহূর্তটিকে “আমাদের সকলের কাছে নিজেদের ভারতীয়ত্ব উদযাপন করার উপলক্ষ” বলে অভিহিত করেন। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি তাঁর বক্তৃতায় ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদেরও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। বলেছেন, “এই উপলক্ষ্যে আসুন আমরা সেই মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণ করি, যাঁরা স্বরাজের স্বপ্নের দেখে অতুলনীয় সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। এর জন্য লড়াই করার জন্য জনগণকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।”
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, “দু’দিন আগেই, ২৩ জানুয়ারি আমরা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী পালন করেছি। তিনি ‘জয় হিন্দ’ এর মতো শক্তিশালী ডাক দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার জন্য তাঁর লড়াই এবং ভারতকে নিয়ে গর্ব করার তাঁর যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা, তা আমাদের সকলকেই অনুপ্রাণিত করে।” তাঁর কথায়, এই বছরের প্রজাতন্ত্র দিবসের উদযাপন মহামারীর কারণে অনেকটা জাকজমকহীন হতে পারে, তবে প্রজাতন্ত্র দিবসের চেতনা আগের মতোই শক্তিশালী।”
আমাদের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে দেশের সশস্ত্র বাহিনী এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা অটুট রাখার জন্য পুলিশকর্মীদের অবিরাম নজরদারির ভূয়সি প্রশংসা করেন রাষ্ট্রপতি। বললেন, “তাদের জন্যই যে দেশের বাকি সহ নাগরিকরা শান্তিপূর্ণভাবে জীবন যাপন করতে পারেন। একজন বীর জওয়ান কর্তব্যরত অবস্থায় মারা গেলে সারা দেশ শোকাহত হয়। গত মাসে, এক দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনায়, আমরা দেশের অন্যতম সাহসী কমান্ডার – জেনারেল বিপিন রাওয়াত, তাঁর স্ত্রী এবং অনেক বীর জওয়ানকে হারিয়েছি। মর্মান্তিক ক্ষতির জন্য সমগ্র দেশ গভীরভাবে শোকাহত। আজ, আমাদের সেনা জওয়ান এবং নিরাপত্তা কর্মীরাই জাতীয় গর্বের উত্তরাধিকার বহন করছেন। হিমালয়ের অসহ্য ঠাণ্ডায় হোক কিংবা মরুভূমির প্রচণ্ড গরমে, পরিবার থেকে বহু দূরে, তাঁরা মাতৃভূমির পাহারা দিচ্ছেন।”
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের জাতির উদ্দেশে ভাষণে উঠে এল বর্তমান মহামারী পরিস্থিতির কথাও। “বিশ্বের এখনকার মতো এত সাহায্যের প্রয়োজন ছিল না। প্রায় দুই বছরেরও বেশি হয়ে গিয়েছে, মানব সভ্যতা এখনও করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়েছে। বর্তমানে গোটা বিশ্ব নজিরবিহীন দুর্দশায় ভুগছে। নতুন ভ্যারিয়েন্টের উত্থানের পর নতুন সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এটি মানবজাতির জন্য এক ভীষণ রকমের চ্যালেঞ্জ ছিল।”