চেন্নাই: ঘুমোতে যাওয়ার সময় আপনার ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ছিল মাত্র ১০৫ টাকা। ঘুম থেকে উঠে দেখলেন অ্য়াকাউইন্ট ব্যালেন্স ৯০০০ কোটি টাকা! মনে হতেই পারে স্বপ্ন দেখছেন। সেটাই মনে হয়েছিল, চেন্নাইয়ের ট্যাক্সি চালক রাজকুমারের। কিন্তু, চোখ কচলে দেখেছিলেন, স্বপ্ন নয়, সেটাই বাস্তব। রাতারাতিও নয়, কয়েক ঘণ্টার এদিক-ওদিকেই ধনকুবেরে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। তবে, এই ধনপ্রাপ্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ঘুম ভেঙে গেলে যেমন স্বপ্নেরও শেষ হয়, তেমনই তাঁর এই ধনকুবের দশাও বেশিক্ষণ টেকেনি। মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যেই কোটি কোটি টাকা থেকে একেবারে শূন্যে নেমে আসে তাঁর ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স।
নাম রাজকুমার হলেও, এমনিতে তাঁর নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। পালানির নেকারপট্টি গ্রামের বাসিন্দা রাজকুমার বর্তমানে থাকেন চেন্নাইয়ের কোড়াম্বাক্কাম এলাকায়। নিজের থাকার জায়গা নেই, এক বন্ধুর বাড়িতে থাকেন। যে ট্যাক্সিটি চালান, সেটিও নিজের নয়। ভাড়ায় নেওয়া। ৯ সেপ্টেম্বর বেলা ৩টে নাগাদ গাড়িতেই ছোট্ট করে ঘুম লাগিয়েছিলেন তিনি। ঘুম ভেঙে উঠে দেখেছিলেন, তাঁর ফোনে একটি টেক্সট মেসেজ এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, তামিলনাড়ু মার্কেন্টাইল ব্যাঙ্ক থেকে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৯,০০০ কোটি টাকা জমা করা হয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই ওই বার্তা বিশ্বাস করেননি রাজকুমার। তাঁর অ্যাকাউন্টে ছিল সাকূল্যে ১০৫ টাকা। কীভাবে এত টাকা তার অ্যাকাউন্টে এল, তা ভবেই পাচ্ছিলেন না তিনি। সত্যি বলতে, কত টাকা ঢুকেছে, তা বুঝতেই তিনি হিমশিম খেয়েছিলেন। কতগুলি শূন্য আছে, তা গুণেই শেষ করতে পারছিলেন না তিনি। তারপর ভেবেছিলেন, নিশ্চয়ই কেউ তাঁর সঙ্গে মজা করছে। কেউ তাঁকে ওই বার্তা পাঠিয়ে ঠকানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু, বার্তাটি একেবারে উপেক্ষাও করতে পারেননি তিনি। সত্যিই তাঁর অ্যাকাউন্টে ওই বিপুল পরিমাণ অর্থ ঢুকেছে কিনা, যাচাই করতে, তিনি তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর এক বন্ধুকে ২১,০০০ টাকা পাঠান। টাকাটি সফলভাবে বন্ধুর অ্যাকাউন্টে পৌঁছনোর পর, তিনি বুঝতে পারেন, তিনি কোনও স্বপ্ন দেখছেন না, বা কেউ তাঁর সঙ্গে মজা করছে না। সত্যিই তাঁর অ্যাকাউন্টে ৯০০০ কোটি টাকা ঢুকেছে।
এটা জানার পর, তাঁর খুশির আর সীমা ছিল না। তবে, তাঁর এই আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কয়েক মিনিট পরই থুদুকুড়ি থেকে একটি ফোন এসেছিল। ফোনটি এসেছিল তামিলনাড়ু মার্কেন্টাইল ব্যাঙ্কের প্রধান কার্যালয় থেকে। তাঁকে ফোন করে জানানো হয়, ভুলবশত ব্যাঙ্ক থেকে তাঁর অ্যাকাউন্টে ওই বিপুল অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছিল। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁকে ওই টাকা আর না খরচ করার নির্দেশ দেয়। পরবর্তীকালে, ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে তার অ্যাকাউন্ট থেকে বাকি অর্থ ফিরিয়ে নেওয়া হয়। রাজকুমারের ফোনে ঢোকা বার্তা অনুযায়ী, এর ফলে তাঁর ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স শূন্য হয়ে যায়। তবে, যে ২১০০০ টাকা তিনি খরচ করেছিলেন, তা তাঁকে ফিরিয়ে দিতে হয়েছে কিনা, সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয়। জানা গিয়েছে, এই বিষয়ে ব্যাঙ্ক এবং রাজকুমারের মধ্যে একটি বোঝাপড়া হয়েছে।