শ্রীনগর: বেশ কয়েকমাস ধরেই কাশ্মীরে, মাঝে মাঝেই জঙ্গি আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। সবথেকে বেশি চিন্তার বিষয়, সেনা জওয়ান ও পুলিশকর্মীদের পাশাপাশি নিরীহ সাধারণ মানুষকেও নিশানা করছে জঙ্গিরা। সূত্রের খবর, সম্প্রতি নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, যেসমস্ত জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বন্দুক ছেড়ে মূলস্রোতে ফিরে আসার জন্য আত্মসমর্পন করেছিলেন, তাদের অনেকের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করেছে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনের কমান্ডরা। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, সন্ত্রাসের রাস্তা থেকে সরে আসা জঙ্গিদের পুনরায় নাশকতা মূলক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য মগজধোলাই করা হচ্ছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর এক সিনিয়র আধিকারিক বলেন, “জীবনের মূলস্রোতে ফিরে আসার জন্য বেশ কিছু জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তারাই আমাদের জানিয়েছেন, পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনের কমান্ডরা তাদের সঙ্গে আবার যোগাযোগ করছে এবং তাদেরকে আবার জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে।”
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সম্প্রতি পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সিনিয়র আধিকারিকদের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন এবং জইশ ই মহম্মদের নেতৃত্বের সঙ্গে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বিম্বার এলাকায় একটি গোপন বৈঠক হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর ওই সিনিয়র আধিকারিক বলেন, “ওই বৈঠকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হিসেবে জম্মু ডিভিশনে আরও বেশি মাত্রা নিয়োগ ও নেতৃত্ব তুলে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জঙ্গিদের পথপ্রদর্শক হাজি আরিফে গতমাসেই পুঞ্চ ও রাজৌরি এলাকায় নিকেশ করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। তাঁকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এরপাশাপাশি ছেড়ে যাওয়া জঙ্গিদের ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব আরিফকেই দিয়েছিল আইএসআই। আরিফ বেশ কিছু প্রাক্তন জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। তাদের একজনই নিরাপত্তা বাহিনীকে এই কথা জানিয়েছে।”
সূত্র মারফত খবর, শেষ কয়েকমাসে কাশ্মীর উপত্যকায় বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে জঙ্গি সংগঠনগুলি। এমনকি উপত্যকায় নিজেদের উপস্থিতিও জানান দিতে পারেনি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। নিরাপত্তা বাহিনীর ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, “এরফলে জঙ্গি সংগঠনের নিচু তলার কর্মীদের মনোবল ধাক্কা খেয়েছে। মূলত পুঞ্চ ও রাজৌরি এলাকায় জঙ্গি সংগঠনের ওপর এর প্রভাব সবথেকে বেশি ছিল। ফলে নতুন করে নিজেদের সংগঠনকে বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা ছাড়া জঙ্গি সংগঠনগুলির কাছে কোনও উপায় ছিল না।”