পুনে: জাতীয় রাজনীতিতে অনেকটাই একঘরে হয়ে পড়েছে কেসিআর-এর ভারত রাষ্ট্র সমিতি বা বিআরএস। মাস কয়েক আগেও, কংগ্রেস-বিজেপিকে বাদ দিয়ে, একটি বিকল্প জোট গঠন করার চেষ্টা করেছিলেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধী পরিসরের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। তবে, নীতীশ কুমারের আহ্বানে শেষ পর্যন্ত যখন বিরোধী জোট একটা আকার নিতে শুরু করেছে, সেই জোটে ডাকা হয়নি বিআরএস-কে। এই অবস্থায় দলের শক্তি বাড়ানোর দিকে মন দিলেন কে চন্দ্রশেখর রাও। সোমবার ৬০০ গাড়ির বিশাল কনভয় নিয়ে তেলঙ্গানা থেকে মহারাষ্ট্রের সোলাপুর জেলার পন্ধরপুরে গিয়েছিলেন দলীয় প্রচারে। এনসিপির এক বড় নেতাও যোগ দিয়েছেন তাঁর দলে। এই ‘শক্তিপ্রদর্শন’ অত্যন্ত ‘উদ্বেগজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার।
বর্তমানে, বিরোধী জোটের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র শরদ পওয়ার। জোটের অন্যতম প্রবক্তা বলা যেতে পারে। কেসিআর-এর সাম্প্রতিক মহারাষ্ট্র সফর নিয়ে তিনি জানিয়েছেন, প্রতিবেশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের রাজ্যে এসে পুজো দিতে পারেন, রাজনৈতিক প্রচারও করতে পারেন। কিন্তু, গাড়ির বিশাল সংখ্যা দিয়ে কেসিআর তাঁর শক্তি প্রদর্শন করতে চাইছেন। অর্থের জোর দেখাতে চাইছেন। শরদ পওয়ার বলেন, “গাড়ির সংখ্যা দিয়ে শক্তি প্রদর্শনের এই প্রচেষ্টা উদ্বেগজনক। কে চন্দ্রশেখর রাও যদি দুই রাজ্যের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর দিকে মন দিতেন, তাহলে ভাল হত।”
আসলে মহারাষ্ট্রে পা রাখতে চেয়ে, প্রথমেই শরদের দলেই ভাঙন ধরিয়েছেন কেসিআর। ২০২১ সালে পন্ধরপুর বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন হয়েছিল। ভগীরথ ভালকেকে প্রার্থী করেছিল এনসিপি। তিনি জিততে পারেননি। এই ভালকেই সোমবার শিবির পাল্টে যোগ দিয়েছেন ভারত রাষ্ট্র সমিতিতে। তবে, এতে তাঁর দলের কোনও ক্ষতি হবে না বলেই দাবি করেছেন এনসিপি প্রধান। পওয়ার বলেছেন, “কোনও এক ব্যক্তি দল ছাড়লে, সেই নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। ভগীরথ ভালকেকে টিকিট দেওয়ার পর আমরা বুঝেছিলাম, আমাদের বাছাই ভুল হয়েছে। সেই বিষয়ে আর কথা বলতে চাই না।”
গত সোমবার, সোলাপুর জেলার পন্ধরপুরের বিখ্যাত ভিত্তল-রুক্মিনী মন্দির দর্শন করতে এসেছিলেন কে চন্দ্রশেখর রাও। সঙ্গে ছিল ৬০০ গাড়ির কনভয়। মন্দিরে পুজোপাঠের পর, সেখান থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে সারকোলি গ্রামে একটি সভা করেন তিনি। সেই সভাতেই ভালকের হাতে বিআরএস-এর পতাকা তুলে দেওয়া হয়। কেসিআর-এর জাতীয় আকাঙ্খাকে সফল করতে, তেলঙ্গানার পর, এখন মহারাষ্ট্রেও পা রাখতে চাইছে ভারত রাষ্ট্র সমিতি। তবে, তেলঙ্গানার শক্ত ঘাঁটিতেই শক্তি হারাচ্ছে বিআরএস। গত রবিবারই, এক প্রাক্তন সাংসদ ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী-সহ ৩৫ জন নেতা বিআরএস থেকে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে, চলতি বছরে নিজের রাজ্যে নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে হবে কেসিআর-কে। এই অবস্থায় অন্য রাজ্যে দলকে ছড়িয়ে দিতে গিয়ে দুই কূলই কি যাবে বিআরএস-এর? নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।