মুম্বই : একুশে বাংলা জয়ের পর থেকেই চব্বিশে দিল্লির মসনদকে পাখির চোখ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Trinamool supremo Mamata Banerjee)। আর সেই কারণেই গত বছর থেকেই দিল্লি জয়ের ঘুঁটি সাজানো শুরুও করে দিয়েছেন তিনি। এনডিএ বিরোধী জোট (NDA opposition alliance) তৈরির প্রক্রিয়াও পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও সেখানে কংগ্রেসের (Congress) অবস্থান নিয়ে দোলাচল অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি দেশের সমস্ত অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের (Non-BJP chief ministers) একজোট হওয়ার জন্য চিঠি লিখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ২৯ মার্চ একজোট হওয়ার ডাক দিয়ে বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছিলেন মমতা। এ বার মমতার সেই ডাকে সাড়া দিল বিজেপির এককালের জোটসঙ্গী শিবসেনা (Shivsena)। সূত্রের খবর, দ্রুত মুম্বইয়ে অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক হতে পারে। রবিবার এমনটাই জানিয়েছেন শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সঞ্জয় রাউত জানান, ‘বিরোধী জোট নিয়ে সম্মেলন করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের চিঠি দিয়েছিলেন। তারপরেই আমরা এই বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করি। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গেও বেশ কয়েক দফায় আলোচনা হয়। আলোচনা হয় এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারেরর সঙ্গেও। সেখানেই সম্মলনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। খুব দ্রুত আমরা অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে এই সম্মেলনের আয়োজন করব’।
এদিকে এই খবর সামনে আসতেই যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে জাতীয় রাজনীতির অঙিনায়। সূত্রের খবর, মুম্বইয়ে এই সম্বেলনের প্রধান আয়োজকের ভূমিকায় থাকছে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট। তবে এই খবর যে গেরুয়া শিবিরের স্নায়ুর চাপ অনেকটাই বাড়ল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রসঙ্গত গতকালই বাংলা সহ একাধিক রাজ্যের উপনির্বাচনের ফল সামনে আসে। তাতে দেখা যায় বেশিরভাগ কেন্দ্রেই ভরাডুবি হয়েছে বিজেপি। আর তারপরেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ক্রমবর্ধমানে সাম্প্রদায়িক হিংসা, রাজনৈতিক হিংসা এবং সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতবাসীর উদ্দেশ্যে একটি খোলা চিঠি লেখেন বিরোধী শিবিরের ১৩ জন নেতা-নেত্রী। তালিকায় ছিলেন কংগ্রেস প্রধান সোনিয়া গান্ধীও। যা নিয়ে গতকাল দিনভর চলে রাজনৈতিক চর্চা।
বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের দাবি যেভাবে গোটা দেশে খাদ্য, বস্ত্র, ভাষা, ধর্ম, উৎসবকে হাতিয়ার করে দেশের বর্তমান শাসক শিবিরের নেতা-কর্মীরা যে ভাবে উস্কানিমূলক ভাষণ দিচ্ছেন, ঘৃণা ছাড়াচ্ছেন তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। তারপরেও তাদের কোনও প্রকার শাস্তি হচ্ছে হচ্ছে না। প্রত্যেকেই ছাড় পেয়ে যাচ্ছে। এই ইস্যুতে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেভাবে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন তা সাধারণ মানুষের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বলে মত মমতা-সনিয়াদের। এই চিঠি নিয়েও গতকাল তুমুল চর্চা চলে দেশের রাজ্য-রাজনীতিতে। এবার তার ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের এই বৈঠকের খবর নতুন করে অস্বস্তি বাড়াল মোদী ব্রিগেডের।
আরও পড়ুন -দলীয় শৃঙ্খলা সবার আগে, গৌরীশঙ্করদের পদ ছাড়াতেও ‘কড়া’ সুকান্ত