নয়া দিল্লি: তার ভালবাসার টানে নিজের পরিবার, বাড়ি, শহর ছেড়ে দিল্লিতে পাড়ি দিয়েছিলেন শ্রদ্ধা ওয়াকার। তবে সেই প্রেমিকের হাতেই নৃশংস ভাবে খুন হয়েছেন শ্রদ্ধা। তাঁর মৃত্যুর বেশ কয়েক মাস পরে অবশ্য ঘটনাটি সামনে এসেছে। শিরোনামে শ্রদ্ধার খুনি তথা এককালের প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। কিন্তু কে এই আফতাব? আদতে মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা আফতাব কয়েক মাস আগেই শ্রদ্ধার সঙ্গে দিল্লিতে এসে বসবাস শুরু করে। ২০১৯ সাল থেকে শ্রদ্ধার সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। তবে তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি শ্রদ্ধার পরিবার। তাই চলতি বছরের এপ্রিলে দিল্লি আসে যুগল। তবে মে মাসেই নৃশংস ভাবে খুন করা হয় শ্রদ্ধাকে।
জানা গিয়েছে, খুনে অভিযুক্ত আফতাব একজন ফুড ব্লগার। তিনি শেফও বটে। তাঁর হোটেল ম্যানেজমেন্টের জ্ঞান প্রয়োগ করেই মৃত প্রেমিকার দেহের ৩৫ টুকরো করেছিল আফতাব। শুধু তাই নয়, শ্রদ্ধার আন্ত্রকে প্রায় কিমায় পরিণত করেছিল আফতাব। হোটেল ম্যানেজমেন্টের পড়ুয়া হলেও একটি কল সেন্টারে চাকরি করত আফতাব। তার সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে ফুড ব্লগিং করত সে। ইনস্টাগ্রামে তার ফলোয়ারের সংখ্যা নেহাত কম নয়। জানা গিয়েছে, প্রায় ২৮ হাজার লোক তার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল ফলো করে। তবে বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে ইনস্টাগ্রামে নতুন কোনও ভিডিয়ো আপলোড করেনি আফতাব।
জানা গিয়েছে, মার্চ-এপ্রিল মাসে শ্রদ্ধার সঙ্গে হিমাচলে গিয়েছিল আফতাব। সেখানে এক দিল্লিবাসীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল দু’জনের। পরে দিল্লি এসে সেই ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া থাকতে শুরু করেছিল যুগল। পরে মেহরাউলিতে একটি ঘর ভাড়া করে সেখানে চলে যায় আফতাব এবং শ্রদ্ধা। মে মাসে সেই ফ্ল্যাটেই শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে আফতাব। পরে মার্কিন টিভি সিরিজ ‘ডেক্সটার’-এর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে প্রেমিকার দেহের ৩৫ টুকরো করে। প্রেমিকার দেহাবশেষ সংরক্ষণ করতে নয়া ফ্রিজ কেনে আফতাব। জেরায় আফতাব জানিয়েছে, মে মাসে শ্রদ্ধার খুন হলেও তাঁর মাথা অগাস্ট পর্যন্ত নিজের ফ্রিজে রেখে দিয়েছিল আফতাব। এই দীর্ঘ সময়ে আফতাব অন্য শয্যাসঙ্গিনীকে নিজের ফ্ল্যাটে এনেছিল। গুগলে আফতাব মানবদেহের কাঠামো নিয়ে রীতিমতো পড়াশোনা করেছিল। ব্লিচিং দিয়ে প্রেমিকার টুকরো টুকরো দেহ ধুয়েছিল সে। এখন পুলিশ আফতাবকে জেরা করে শ্রদ্ধার দেহাংশগুলি উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। মঙ্গলবার শ্রদ্ধার দেহের ১২টি টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। তবে এখনও শ্রদ্ধার মাথার খোঁজ মেলেনি।