বেঙ্গালুরু: আগামী মাসেই কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচন (Karnataka Assembly Election)। এই মুহূর্তে প্রচারে যেখানে ঝড় তুলছে রাজনৈতিক দলগুলি। সেখানে দড়ি টানাটানি চলছে কংগ্রেসের অন্দরে। কর্নাটক কংগ্রেসের সভাপতি ডিকে শিবকুমার ও কর্নাটকের প্রাক্তন কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার অম্ল-মধুর সম্পর্ক মাঝে মধ্যেই প্রকাশ পায়। কংগ্রেস এই দক্ষিণী রাজ্যে ক্ষমতায় আসলে মুখ্যমন্ত্রীর সিংহাসন কার হাতে তুলে দেবে তা নিয়ে দর কষাকষি হওয়া বড় কোনও বিষয় নয় সেখানে। তবে এবার সেইসব সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন সিদ্দারামাইয়া নিজেই। তিনি জানিয়েছেন,কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিই অবলম্বন হবে।
কর্নাটকের কংগ্রেসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুই নেতা হলেন, ডিকে শিবকুমার ও সিদ্দারামাইয়া। একজন যেমন দক্ষ হাতে সংগঠন সামলাচ্ছেন। আরেকজন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদে ইতিমধ্যেই রাজত্ব করেছেন। আর কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে রয়েছেন দু’জনই। তবে কর্নাটকে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসলে তাঁদের মধ্যে কোনও একজনকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিতে কংগ্রেসের হাই কম্য়ান্ডের কোনও ভূমিকা থাকবে না বলেই জানিয়ে দিলেন সিদ্দারামাইয়া। এক্ষেত্রে নির্বাচিত বিধায়করাই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে দাবি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি এনডিটিভিকে দেওয়া এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় চলতে হবে। হাইকমান্ড নিজে থেকে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না। নবনির্বাচিত বিধায়কদের মতামত অনুযায়ী চলা হবে।”
এই দক্ষিণী রাজ্যে কংগ্রেসের সব মুশকিল আসান ডিকে শিবকুমার। তিনি বর্তমানে কর্নাটক কংগ্রেসের সভাপতি। ২০২০ সালের জুলাই মাসে দীনেশ গুন্ডুকে সরিয়ে দলের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে তুলে দেওয়া হয়। এদিকে দীনেশ কিন্তু সিদ্দারামাইয়ার আস্থাভাজন ছিলেন। এই সাক্ষাৎকারেও ৭৫ বছর বয়সী সিদ্দারামাইয়া স্পষ্ট করলেন, এটাই তাঁর শেষ নির্বাচন। এরপর নির্বাচনী রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন তিনি।
অন্যদিকে সিদ্দারামাইয়া ও শিবকুমারের মধ্যে রেষারেষি আজকের নয়। তবে কর্নাটকে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রাকে ঘিরে সেই দ্বন্দ্বে কিছুটা বিরতি দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এই ফেব্রুয়ারিতেই দুই নেতা আলাদাভাবে রাজ্যের দক্ষিণ ও উত্তরে যান। আর তাঁদের মধ্যে বিবাদ আরও চওড়া হয় যখন প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা আনন্দ সিং শিবকুমারের সঙ্গে দেখা করেন। সিদ্দারামাইয়া দলবদলুদের দলে ফিরিয়ে না নেওয়ার বিষয়ে অনড় ছিলেন। এই নিয়ে ফের দুই নেতার মধ্যেকার বিবাদ স্পষ্ট হয়। তবে বিভিন্ন বিষয়ে দুই নেতাই ভিন্ন মত পোষণ করলেও, তাঁরা একটি বিষয়ে একমত। কর্নাটকে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা হবে না এবং জেডিএস-র সঙ্গে জোটে যাবে না কংগ্রেস। বাকি কী ঘটে তা নির্বাচনের পরেই জানা যাবে। আগামী ১০ মে হবে ভোটগ্রহণ। ফল ঘোষণা ১৩ মে।