সিকিম: হিমবাহে ঘেরা লেক যে একদিন জল না ধরে রাখতে পেরে ফেটে যেতে পারে, সে আশঙ্কা অনেক বছর ধরেই ছিল। দক্ষিণ লোনাক লেক নিয়ে গবেষণাও কম হয়নি। কোনও বিপর্যয় ঘটলে যাতে আগাম প্রশাসনকে সতর্ক করা যায়, সেই ব্যবস্থাও করছিল সিকিম সরকার। বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করার সব ব্যবস্থাই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার আগেই ঘটে গেল দুর্ঘটনা। হড়পা বানে ভেসে গেল বিস্তীর্ণ এলাকা। ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এখনও খোঁজ নেই অনেকের।
ওই হ্রদটি যেহেতু হিমবাহে ঘেরা ছিল, তাই বিপর্যয়ের আশঙ্কা করেই অনেকদিন আগে বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলেছিল প্রশাসন। সেই মতো এগোচ্ছিল কাজ। বন্যা হলেও তার প্রভাব যেন খুব বেশি না পড়ে তার জন্য় বসানো হচ্ছিল আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম। যাতে আগাম খবর পেয়েই দ্রুত বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যেতে পারে প্রশাসন। প্রাথমিক কিছু মেশিন বসানোও হয়ে গিয়েছিল ওই হ্রদে। গত মাসেই জলের স্তর মাপার জন্য বসানো হয়েছিল ক্যামেরা। আবহাওয়া খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছিল।
রয়টার্স-এ প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, মাত্র ২ সপ্তাহ আগেও বিজ্ঞানীদের একটি টিম কাজ করছিল ওই লোনাক লেকে। জুরিখ ইউনিভার্সিটির ভূবিশেষজ্ঞ সিমন অ্যালেন এই ঘটনায় রীতিমতো বিস্মিত। প্রকল্পের কাজ ধাপে ধাপে এগোনোর কথা ছিল। জানা গিয়েছে, ওই প্রকল্প সম্পূর্ণ হলে এমন ব্যবস্থা তৈরি হত, যাতে বিপর্যয়ের অন্তত ৯০ মিনিট আগে সতর্ক হতে পারত প্রশাসন। তবে যে মেশিনগুলি লাগানো হয়েছিল সেগুলিও কাজ করেনি এই হড়পা বানে। রয়টার্সে প্রকাশিত তথ্য বলছে, কোনও এক অজ্ঞাত কারণে ওই মেশিনগুলির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল, সে কারণেই কোনও সতর্কবার্তা পৌঁছয়নি প্রশাসনের কাছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার আচমকাই জলস্তর বেড়ে যায় সিকিমের ওই দুর্গম পার্বত্য হ্রদে। তারপর আচমকাই ফেটে গিয়ে জল বেরিয়ে আসতে শুরু করে হ্রদ থেকে। তিস্তায় জলের তোড় বেড়ে যাওয়ায় ভেসে যায় একের পর এক এলাকা।