নয়া দিল্লি : প্রত্যকদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা সংক্রমণ। আর যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা অবাক করে দেওয়ার মতো। বিশেষত দেশের কয়েকটি শহরে যে পরিসংখ্যান সামনে আসছে, তা দেখে তৃতীয় ঢেউযের আশঙ্কায় প্রহর গুনতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। মুম্বইতে একদিনে দৈনিক সংক্রমণ বেড়েছে ৮২ শতাংশ, দিল্লিতে একদিনে ৮৬ শতাংশের হাই জাম্প। এই পরিস্থিতিতে দেশের ৮ রাজ্যকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলল কেন্দ্র। সেই তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। কলকাতার সংক্রমণও যে কোনও সময় ছুঁয়ে ফেলবে মুম্বই কিংবা দিল্লিকে।
তাই আট রাজ্যকে চিঠি দিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। মৃত্যুর হার কমাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। হাসপাতালগুলি প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ও করোনা টিকাকরণে যাতে আরও বেশি গতি আনা যায়, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়ছে।
মুম্বই ও দিল্লি, এই দুই শহরে করোনা সংক্রমণ সবথেকে বেশি হারে বৃদ্ধি পেলেও পিছিয়ে নেই কলকাতা। তালিকায় রয়েছে গুরগাঁও, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, আমেদাবাদ।
মুম্বইতে শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ২৫১০, বুধবারের তুলনায় যা ৮২ শতাংশ বেশি। দিল্লিতে একদিনে আক্রান্ত ৯২৩ জন, বুধবারের তুলনায় যা ৮৬ শতাংশ বেশি। এই দুই শহরে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা সবথেকে বেশি। হরিয়ানার গুরগাঁওতে ১৫ থেকে ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে মোট সংক্রমণ ছিল ১৯৪। ২২ থেকে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে অর্থাৎ ঠিক পরের সপ্তাহে সেটা বেড়ে হয়েছে ৭৩৮। ওই একই সময়ের ব্যবধানে চেন্নাইতে করোনা আক্রান্ত বেড়ে ১০৩৯ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৭২০, কলকাতায় ১৪৯৪ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৬৩৬, বেঙ্গালুরুতে এই সংখ্যাটা ১৪৪৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৯০২।
রাজ্যে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে। এমন আশঙ্কাই করছেন বিশেষজ্ঞরা। কলকাতায় মিলেছে গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিতও। ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় সতর্কবার্তা জারি করেছে স্বাস্থ্যভবন। অনুমান করা হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে এক সপ্তাহের মধ্যেই একেবারে চূড়ায় পৌঁছে যাবে সংক্রমণ। দৈনিক সংক্রমণ পৌঁছতে পারে ৩০ থেকে ৩৫ হাজারে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, বেসরকারি ল্যাবে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে টেস্ট। হাতে আসা তথ্য নতুন করে ভয় ধরাচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার একধাক্কায় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে অনেকটাই। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ১৫৪ জন। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা। বৃহস্পতিবার দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯৬১ জন। হাজার পার হতে খুব বেশি দেরি নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। হঠাৎ করেই এমন সংক্রমণের বৃদ্ধি স্বাভাবিক নয় বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকদের মতে, ভারতে সংক্রমণের ছবিটা দ্রুতগতিতে বদলাচ্ছে। ফলে এখন থেকেই সতর্ক হওয়াটা জরুরি বলে মনে করছেন তাঁরা।