মুম্বই: দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের (Omicron Variant) সংক্রমণ রুখতে কড়া হল মুম্বই (Mumbai) প্রশাসন। দক্ষিণ আফ্রিকায় (South Africa) প্রথম এই সংক্রামক ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মেলায়, সেই দেশ থেকে আগত সমস্ত যাত্রীদেরই মুম্বই বিমানবন্দরে এলে বাধ্য়তামূলকভাবে করোনা পরীক্ষা (COVID test) ও নিভৃতবাসে(Quarantine) থাকতে হবে। যেসমস্ত যাত্রীদের করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসবে, তাদের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিং(Genome Sequencing)-র জন্য়ও পাঠানো হবে, এমনটাই জানিয়েছেন মুম্বইয়ের মেয়র।
দেশে করোনা সংক্রমণের শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এরই মধ্য়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে নতুন এক ভ্যারিয়েন্ট। চলতি সপ্তাহেই দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম খোঁজ মেলে বি.১.১৫২৯ নামক এক নতুন ভ্যারিয়েন্টের, যা অতি সংক্রামক বলেই মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট হংকং, ইজরায়েল ও বেলজিয়ামেও ছড়িয়ে পড়েছে এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টটির স্পাইক প্রোটিনে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৫০ বার অভিযোজন হয়েছে। এতবার অভিযোজন হওয়ায়, তা বাকি ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় আরও সংক্রামক ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে কিনা, বর্তমানে তা পরীক্ষা করে দেখছেন গবেষকরা।
একাধিক দেশ ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণার পরই মুম্বই প্রশাসনের তরফেও আগত যাত্রীদের নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। শনিবার মুম্বইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকর বলেন, “করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে মুম্বইয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। আপাতত বিমান চলাচলে কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে না, তবে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আগত সমস্ত যাত্রীদের জিনোম সিকোয়েন্সিং করানো হবে। বিগত দিনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “অন্যান্য দেশ থেকে আগত যাত্রীদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সুতরাং বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা ও জিনোম সিকোয়েন্সিং করাতে হবে। আমি সকলকে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ করছি। আশা করছি সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমেই এই নতুন বিপত্তি এড়ানো যাবে।”
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আগত যাত্রীদের বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তারা নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত কিনা, তা জানার জন্য জিনোম সিকোয়েন্সিং করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও এদিন সকালেই প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন, করোনার নতুন ভ্য়ারিয়েন্টটি যে যে দেশে পাওয়া গিয়েছে, সেই সম্স্ত দেশের সঙ্গে যেন দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করা হয়। আগামী সোমবার তিনি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। আফ্রিকার দেশগুলিতে পাওয়া যাওয়া এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট থেকে কী কী বিপদ হতে পারে, তা নিয়েই এই বৈঠকে আলোচনা করা হবে। বৈঠকে আমন্ত্রিত বিশেষজ্ঞরা দিল্লি বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের কাছে একটি উপস্থাপনা (presentation) পেশ করতে বলা হয়েছে। কীভাবে রাজধানীকে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট থেকে সুরক্ষিত রাখা যায়, তা নিয়েও বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।