নয়া দিল্লি: দিল্লি সরকারের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন বিলি করার প্রকল্পের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কেন্দ্র। কেন্দ্রের বক্তব্য ছিল, দিল্লি সরকারের এই প্রকল্প এ ভাবে চালু করা সম্ভব নয়। এর জন্য জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনে সংশোধন প্রয়োজন। কিন্তু ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত একটি মামলা চলছে দিল্লি হাইকোর্টে। তাই আজ কেন্দ্রের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও এবং বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের বেঞ্চ আজ কেন্দ্রেরও ওই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। দিল্লি হাইকোর্ট এই সংক্রান্ত যে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছে, তা নিয়ে ২২ নভেম্বরের মধ্যে একটি সিদ্ধান্তে আসার জন্য হাইকোর্টকে অনুরোধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা জানিয়েছেন, “যেহেতু মামলাটি ইতিমধ্যে হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে, তাই এই মামলা গ্রহণ করা হচ্ছে না।
দিল্লি সরকারের পক্ষে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি আজ সুপ্রিম কোর্টে সরকারের বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প সংক্রান্ত প্রস্তুতির তথ্য জমা দেন। জানান, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
একইসঙ্গে, দিল্লি হাইকোর্ট বাড়ি বাড়ি রেশন বিলি নিয়ে যে সবুজ সংকেত দিয়েছে, তার বিরোধিতা করে ন্যায্য মূল্যের দোকানের ডিলারদের একটি সংগঠনও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। ওই আবেদনও আজ খারিজ করে দিয়েছেন শীর্ষ আদালত।
আজ কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে বলেন, দিল্লি সরকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে যে রেশন বিলির কথা বলছে, তা জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের ধারাগুলির পরিপন্থী। তাঁর বক্তব্য, “এই বিষয়টির ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। আমাদের জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইন রয়েছে, যা খাদ্যশস্য বিতরণের ব্যবস্থা করে। এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন হল, কোনও একটি রাজ্য সরকার কি এই আইন দ্বারা নির্ধারিত বণ্টনের পদ্ধতি এড়িয়ে যেতে পারে কিনা।”
সলিসিটর জেনারেল তাঁর ব্যাখ্যায় বলেন, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুযায়ী, কেন্দ্র ন্যায্য মূল্যের দোকানগুলির জন্য খাদ্য শস্য বরাদ্দ করে এবং সেই ন্যায্য মূল্যের দোকানগুলি থেকেই উপভোক্তারা খাদ্যশস্য পান। এই ন্যায্য মূল্যের দোকানের ডিলারদের বাছাই করে রাজ্য সরকার। অত্যাবশ্যক পণ্য আইন এবং অন্যান্য আইনের আওতায় এই কাজ চলে। সলিসিটর জেনারেল আরও বলেন, “দিল্লি সরকার যে প্রকল্পটি প্রস্তাব দিচ্ছে, তাতে খাদ্য শস্য বেসরকারি কোনও ভেন্ডরের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। ওই বেসরকারি ভেন্ডর গম ভাঙিয়ে আটা বের করে তা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেবে। এখন আমরা জানতে পারব না, ওই ভেন্ডর কতটা আটা দেবে।”