নয়া দিল্লি: করোনার প্রকোপে হঠাৎ করেই বদলে গিয়েছে সকলের জীবন। বিগত দুই বছরে কেবল দেশেই করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৪ কোটিরও বেশি মানুষ। প্রাণ হারিয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। এক ধাক্কায় অনাথ হয়ে গিয়েছিল হাজার হাজার শিশু। জনসাধারণের জীবনে নেমে আসা হঠাৎ এই বিপর্যয়ের জেরে যে ক্ষতি হয়েছে, তা অপূরণীয়। তবে কিছুটা সহায়তা করতেই সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)-র নির্দেশে কেন্দ্র ও রাজ্যের তরফে করোনায় মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ (Compensation) দেওয়া শুরু হয়েছিল। তবে এই ভাল উদ্যোগ নিয়েও জালিয়াতি শুরু হয়েছে, অনেকেই ভুয়ো সার্টিফিকেট বের করে সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গোটা বিষয়টি জানতে পেরেই সুপ্রিম কোর্টের তরফে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে এই বিষয়ে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটার জেনারেল অব ইন্ডিয়া বা ক্যাগ(CAG)-কে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
গত ৭ মার্চ সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা কেন্দ্রের তরফে শীর্ষ আদালতে কোভিডে মৃত্যুর ভুয়ো সার্টিফিকেটের বিষয়টি তুলে ধরেন। কীভাবে এই ভুয়ো দাবিগুলিকে চিহ্নিত করা সম্ভব, সেই বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। এরপরই বিচারপতি এমআর শাহ ও বিচারপতি বিভি নাগারাথনার বেঞ্চে মামলার শুনানি শুরু হয়।
সেই সময়ই শীর্ষ আদালতের তরফে করোনায় মৃতদের জন্য ঘোষণা করা ক্ষতিপূরণের অপব্যবহার নিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। কারা এই ধরনের ভুয়ো সার্টিফিকেট তৈরির কাজের সঙ্গে জড়িত, তা খুঁজে বের করার জন্য আলাদাভাবে একটি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এমআর শাহ বলেন, “আমরা কোনওদিন কল্পনাও করতে পারিনি যে এই ধরনের ভুয়ো দাবিও করা হতে পারে। ক্ষতিপূরণ দেওয়া একটি পুণ্যের কাজ, সেই প্রকল্পেরও যে অপব্যবহার হতে পারে, তা কল্পনাও করতে পারিনি।”
আজ মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, করোনায় মৃতদের ভুয়ো সার্টিফিকেট নিয়ে একটি বিস্তারিত আবেদন পত্র জমা দিতে। করোনায় মৃত্যুর কতদিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করা যাবে, তার একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। আগামিকালের মধ্যেই এই আবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২১ মার্চ এই মামলার শুনানি হবে।
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা পরামর্শ দেন যে, করোনায় মৃত্যুর কারণে ক্ষতিপূরণের কারণে আবেদনের জন্য একটি সীমার প্রয়োজন। মৃত্যুর চার সপ্তাহের মধ্যেই এই ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে হবে। অন্যদিকে, বিচারপতি এমআর শাহ বলেন, যদি এই অনৈতিক ও বেআইনি কাজে সরকারি আধিকারিকরাও যুক্ত থাকেন, তবে বিষয়টি আরও গুরুতর হয়ে উঠবে।
উল্লেখ্য, গতবছরই করোনায় মৃতদের জন্য কেন্দ্রের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের নির্দেশিকা অনুযায়ী ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের তরফে।
আরও পড়ুন: Supreme Court: বিয়ের পরেই জানতে পারেন স্ত্রীর ‘পুরুষাঙ্গ’ রয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ স্বামী