নয়া দিল্লি : লখিমপুরের হিংসার ঘটনায় এবার স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করল সুপ্রিম কোর্ট। আগামিকালই (বৃহস্পতিবার) এই মামলার শুনানি হবে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামন, বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চে আগামিকাল এই মামলার শুনানি হবে।
লখিমপুরের ঘটনা দিয়ে বিগত কয়েকদিন ধরে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। ঠিক কী হয়েছিল সেদিন? কীভাবে প্রাণ হারালেন আট জন? ঘটনার দায় কাদের উপর? এই সমস্ত বিষয় আগামিকালের শুনানিতে উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে এই মামলা যদি কোনও তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়, তাহলে তা কোন সংস্থার হাতে দেওয়া উচিত, কোন সংস্থার হাতে দায়িত্ব দিলে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব, এমনই একাধিক বিষয় বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে উঠে আসতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর আগে উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরির হিংসায় ৮ জনের মৃত্যুর ঘটনাটিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেনুগোপাল এই সুপ্রিম কোর্টে গোটা বিষয়টিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যা দেন। সোমবার বিচারপতি এএম খানউইলকর এবং বিচারপতি সিটি রবিকুমারের বেঞ্চে কৃষি আইন সংক্রান্ত এক মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতিদ্বয় মৌখিকভাবে পর্যবেক্ষণে বলেন, এই ধরনের ঘটনার দায় কেউই নিতে চায় না। বিচারপতি খানউইলরের মন্তব্য, “এই ধরনের ঘটনা যখন ঘটে তখন কেউ দায় নিতে চায় না। সম্পত্তির ক্ষতি হয়, মানুষজন আহত হন, কিন্তু কেউই দায় নেয় না।” পাশ থেকে বিচারপতি রবিকুমারের সংযোজন, “মৃত্যু হয়।”
বিতর্কিত কৃষি আইন সংশোধনীর বিরুদ্ধে চলা শুনানির সময় কেন্দ্রের পক্ষ রাখার সময় অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছিলেন, “লখিমপুর খেরির দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি আমরা দেখেছি।” যেহেতু কৃষি আইনের বিষয়টি ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে, তাই এই নিয়ে আন্দোলন বা বিক্ষোভ দেখানো যুক্তিসঙ্গত নয় বলে দাবি করতে শোনা যায় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে। লাগাতার আন্দোলন থামা উচিত বলে আদালতে সুর চড়ান অ্যাটর্নি জেনারেলও। তাঁর কথায়, “সরকার খুব স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে কৃষি আইন কোনও মতেই প্রত্যাহার করা হবে না। সুতরাং এই আইনকে চ্যালেঞ্জ করাই (আন্দোলনকারীদের জন্য) এক মাত্র বিকল্প।”
সরকারের বক্তব্য শুনে আদালত পালটা প্রশ্ন করে, “আইন যখন কার্যকরই হয়নি তখন বিক্ষোভ কেন? আদালত তো গোটা বিষয়টার উপরই নজর রেখেছে। আইন কার্যকরের উপর স্থগিতাদেশও রয়েছে।” নতুন করে বিক্ষোভের অনুমতি চাওয়া নিয়ে অসন্তোষ স্পষ্ট করে শীর্ষ আদালত। বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা আইন নিয়ে বিচার চললেও কেন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে? প্রশ্ন আদালতের। “কেউ কোনও পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হল। সেই পক্ষই আবার বলছে, বিষয়টি আদলতে বিচারাধীন, তবে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব, নীতিগতভাবে এটা কী ভাবে সম্ভব”, এমনটাও জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন : Lakhimpur Violence: ‘কৃষকরাই লাঠি, তলোয়ার নিয়ে চড়াও হয়েছিল; কোনওরকমে পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছি’