RG Kar case: আরজি কর কাণ্ডে কতদূর এগিয়েছে তদন্ত? আজ নজর সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে
RG Kar case: আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে সেখানে যান কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগেও তিনি যান। হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। রাজ্য সেই রিপোর্ট জমা দিতে পারে সুপ্রিম কোর্টে।
জ্যোতির্ময় কর্মকার
কলকাতা ও নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি আজ(সোমবার)। বেলা দু’টোয় মামলার শুনানি। গত ১২ দিনে তদন্তের গতিপ্রকৃতি কতদূর এগিয়েছে, এ বিষয়ে সিবিআই এদিন সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দেবে।
গত ১৭ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে CBI-এর রিপোর্টে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছিলেন, তিনি বিচলিত। সিবিআই-কে আরও সময় দেওয়ার কথাও বলেন প্রধান বিচারপতি। এই শুনানির পর মুখ্যসচিবের সঙ্গে জুনিয়ার ডাক্তারদের বৈঠকের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য দফতরের জন্য ১০ দফা নির্দেশিকা জারি করে রাজ্য সরকার। ২১ সেপ্টেম্বর কর্মবিরতি আংশিক তুলে নিয়ে জুনিয়ার ডাক্তাররা জরুরি বিভাগে কাজে যোগ দেন। আজ শীর্ষ আদালতে তদন্তের তৃতীয় স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেবে সিবিআই।
ইতিমধ্যেই , আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে সেখানে যান কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগেও তিনি যান। হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। রাজ্য সেই রিপোর্ট জমা দিতে পারে সুপ্রিম কোর্টে।
আজ শুনানির মূল ফোকাস-
গত ১২ দিনে তদন্তের গতিপ্রকৃতি কতদূর এগিয়েছে, এ বিষয়ে হলফনামা জমা দিচ্ছে সিবিআই। কয়েকদিন আগে শিয়ালদহ স্পেশাল সিবিআই কোর্ট গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ এবং তথ্য প্রমাণ উঠে আসছে যা থেকে তাঁর ফাঁসির সাজাও হতে পারে। সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে নতুন কী কী চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রমাণ এবং লিড উঠে এসেছে, তা উল্লেখ থাকতে চলেছে সিবিআই-এর তদন্ত রিপোর্টে। গত বারো দিনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে একাধিক ব্যক্তিকে তলব করেছে সিবিআই। তাদের থেকে কী তথ্য উঠে এল তা উল্লেখ থাকবে সিবিআই-র হলফনামায়।
গত ১২ সেপ্টেম্বর নির্যাতিতার বাবার সিবিআই তদন্তকারী অফিসারকে লেখা চিঠির প্রেক্ষিতে ১৭ সেপ্টেম্বর শেষ শুনানির দিন সিবিআইকে নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এক্ষেত্রে কোনও নতুন লিড উঠে এল কি না সিবিআই হলফনামায়, নজর থাকবে সেদিকে।
একইসঙ্গে আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং-এর উল্লেখিত জুনিয়র ডাক্তারদের তদন্ত বিষয়ক তথ্য এবং কলকাতা হাইকোর্টের অরিজিনাল পিটিশনার ইন পার্সনের তোলা গুরুতর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিবিআই তদন্ত এগিয়েছে কি না, নজর থাকবে সেদিকে।
আজ শুনানির অন্যতম ফোকাস সাগর দত্তের ঘটনাকে ঘিরে জুনিয়র চিকিৎসকদের নতুন করে কর্মবিরতির ডাক-
১৭ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ইন্দিরা জয়সিং আশ্বাস দিয়েছিলেন, জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে রাজ্য সরকার প্রত্যেকটি পদক্ষেপ করলে আন্দোলনরত রেসিডেন্ট ডাক্তারদের কাজে যোগ দিতে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু স্বাস্থ্যভবনে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি আংশিক প্রত্যাহারের পরে নতুন করে সাগর দত্ত কলেজে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এবং এই ঘটনা নিয়ে নতুন করে কর্মবিরতিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম হলফনামা জমা দিয়ে জানিয়েছেন, হাসপাতালের নিরাপত্তা পরিকাঠামো ঢেলে সাজাতে সরকার কী কী পদক্ষেপ করছে। এবং সেই কাজ দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে। সুপ্রিম কোর্ট এই কাজের রূপরেখা কী হবে তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিয়েছিল।
হাসপাতালের নিরাপত্তা পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর দুই সপ্তাহের সময়সীমা ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত। ফলত রাজ্যের হাসপাতালের নিরাপত্তা পুনর্গঠনের কাজ শেষ হয়েছে কি না, নজর থাকবে সেদিকে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, ১৭ সেপ্টেম্বরে শুনানির পর তিন দিনের মধ্যে হাসপাতালের নিরাপত্তা বিষয়ক বিষয় দেখার জন্য মনিটরিং কমিটি গঠন করতে হবে। প্রত্যেক হাসপাতালে গোপন গ্রিভেন্স রিড্রেসাল সিস্টেম, যৌন হেনস্থা রুখতে কমপ্লেন্ট কমিটি এবং হাসপাতালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাউন্সেলিং সেন্টার চালু করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছিল, তিন দিনের মধ্যে এই কাজ না হলে সুপ্রিম কোর্ট কঠোর অবস্থান নিতে পারে। একদিকে যেমন রাজ্য সরকার এই কাজ শেষ হয়েছে কি না সে বিষয়ে হলফনামায় উল্লেখ করবে। এর পাশাপাশি সাগর দত্ত কলেজে ঘটনার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের এই পদক্ষেপ কতটা কার্যকরী সে বিষয়ে কোনও মতামত বা নির্দেশ দেয় কি না, নজর থাকবে সেদিকে।