এবার ভিখ পাবে গেঁয়ো যোগী? ২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য আসছে স্বদেশি টিকা
সূত্র অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (CDSCO)-এর সাবজেক্ট এক্সপার্টস কমিটি (SEC) মঙ্গলবার দুই থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য ভারত বায়োটেকের কোভাকসিনের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছে।
জ্যোতির্ময় রায়: করোনা (Corona) নিয়ে সারা দেশ ত্রস্ত। এর মধ্যে যেমন অক্সিজেন নিয়ে চলছে হাহাকার, তেমনি করোনা ভ্যাকসিন (Vaccine) নিয়েও রাজনীতি। কথায় আছে গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না। দেশে তৈরি ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। দেশজ ভ্যাকসিন তার জন্মকাল থেকেই নেতিবাচক রাজনীতির শিকার। জন্মলগ্ন থেকেই তার কার্যকারিতা ও গুণমান নিয়ে প্রশ্ন করে আসছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীরা (Rahul Gandhi)। তাছাড়া ভারতীয় ভ্যাকসিনের প্রতি প্রথম থেকেই জনমানসে তৈরি হয়েছে একপ্রকার সন্দেহ। কিন্তু এবার এই দেশজ ভ্যাকসিনই কাজে আসতে চলেছে দুই থেকে ১৮ বছর বয়সীদের। করোনা আবহে ছোটদের জন্য দেশে তৈরি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল হতে চলেছে আর কিছুদিনের মধ্যেই।
এদিকে টিকাকরণ অভিযানের প্রথম দফায় ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারে তীব্র অনীহা প্রত্যক্ষ হয়েছে। কিন্তু করোনার তাণ্ডব আর মৃত্যুমিছিলের মাঝে আবার তীব্র হয়েছে ভ্যাকসিনের চাহিদা। তবে সেসবই বিদেশি ভ্যাকসিন। এদিকে অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও এখন ভ্যাকসিনের বিরাট ঘাটতি দেখা গিয়েছে। বিশাল সংখ্যক মানুষের কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়া এবং উৎপাদন অনেকটা উটের মুখে জিরা’র মতো অবস্থা। এদিকে ভ্যাকসিনের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচেষ্টা জারি রয়েছে।
করোনা ভ্যাকসিনের উৎপাদন বাড়াতে বুলন্দশহরের ভারত ইমিউনোলজিকাল অ্যান্ড বায়োলজিকাল লিমিটেড (বিআইবিসিএল)-কে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন সারা দেশে তিনটি সংস্থাকে কোভ্যাক্সিন উৎপাদনের দায়িত্ব প্রদান করেছে। ইতিমধ্যে বিআইবিসিএল আর ভারত বায়োটেকের মধ্যে চুক্তি সাক্ষরও শেষ। সেই চুক্তি অনুযায়ী, অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে কোভাক্সিনের দেড় কোটি ডোজ প্রস্তুত করবে বিআইবিসিএল।
প্রসঙ্গত, বিআইবিসিএল এতদিন পর্যন্ত পোলিও ভ্যাকসিন তৈরি করে এসেছে। এখন থেকে করোনা ভ্যাকসিন তৈরিতেও হাত দিল তারা। বিআইবিসিএল দেশের মোট পোলিও ভ্যাকসিনের ৬০ শতাংশ উৎপাদন করে। আর প্রতি বছর প্রায় ১৫০ কোটি ডোজ উৎপাদন করে তারা। এই উৎপাদন সক্ষমতা বিবেচনা করেই করোনা ভ্যাকসিন তৈরির দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে এই সংস্থাকে। এই ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য ৩০ কোটি টাকা দিয়েছে মোদী সরকার। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) এবং ভারত বায়োটেক যৌথভাবে এই ভ্যাকসিন তৈরি করছে।
উল্লেখ্য, যখনই কোনও ভাইরাসের তাণ্ডবে পড়েছে বিশ্ববাসী, তার প্রতিষেধক বানাতে কম করে ১০ থেকে ১২ বছর সময় লেগে গিয়েছে। তবে করোনার তাণ্ডব এমনই যে সারা বিশ্বের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা জরুরি ভিত্তিতে এর প্রতিষেধক বের করতে চেষ্টা করে গিয়েছেন। এত কম সময়ের মধ্যে কার্যকরী ভ্যাকসিন তৈরিতে অনেকাংশে সফলও তারা। এদিকে যদি সবকিছু ঠিকঠাক চলে, তাহলে খুব শীঘ্রই কানাডা এবং আমেরিকার পরে, ভারতেও দুই থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য করোনার দেশজ ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলবে।
আরও পড়ুন: স্বদেশি প্রতিষেধক পেয়ে দেশবাসী গর্বিত! আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে: মোদী
সূত্র অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (CDSCO)-এর সাবজেক্ট এক্সপার্টস কমিটি (SEC) মঙ্গলবার দুই থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য ভারত বায়োটেকের কোভাকসিনের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছে। এই পরীক্ষা হবে এইমস দিল্লি, এইমস পাটনা এবং নাগপুরের মেডিট্রিনা ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সে। সব মিলিয়ে ৫৩৫ জন স্বেচ্ছাসেবীর ওপর চলবে ট্রায়াল। ফলের ব্যাপারে বিশেষ আশাবাদী সংশ্লিষ্ট সংস্থা।