Inspirational Story: ঝাড়ুদার থেকে ব্যাঙ্কের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার! প্রতীক্ষার জীবন যেন অনুপ্রেরণার গল্প

TV9 Bangla Digital | Edited By: অংশুমান গোস্বামী

Aug 03, 2022 | 2:18 PM

Pratiksha Tondwalkar: স্বামীকে হারিয়ে কোলের সন্তানকে নিয়েই শুরু হয়েছিল জীবনযুদ্ধ। ব্যাঙ্কে ঝাড়ুদারের কাজ করে চলছিল বেঁচে থাকার লড়াই। যে ব্যাঙ্কে এক সময় ঝাড়ু দিতেন, এখন তিনি সেই ব্যাঙ্কেরই অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার।

Inspirational Story: ঝাড়ুদার থেকে ব্যাঙ্কের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার! প্রতীক্ষার জীবন যেন অনুপ্রেরণার গল্প
প্রতীকী ছবি

Follow Us

মুম্বই: গরিব পরিবারে জন্ম। ছোটবেলায় পড়াশোনার সুযোগ তেমন হয়নি। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই বিয়ে যায়। ২০ বছর বয়সে স্বামীকেও হারিয়েছিলেন। স্বামীকে হারিয়ে কোলের সন্তানকে নিয়েই শুরু হয়েছিল জীবনযুদ্ধ। ব্যাঙ্কে ঝাড়ুদারের কাজ করে চলছিল বেঁচে থাকার লড়াই। যে ব্যাঙ্কে এক সময় ঝাড়ু দিতেন, এখন তিনি সেই ব্যাঙ্কেরই অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার। প্রতিকূলতার মধ্যে লড়াই করে জীবনযুদ্ধ জেতার এই গল্প প্রতীক্ষা তোন্ডওয়ালকরের। হাল না ছাড়া মনোভাব জীবনে প্রতীক্ষিত সাফল্য এনে দেয় তাঁর জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ প্রতীক্ষা।

মহারাষ্ট্রের পুণেতে জন্ম প্রতীক্ষার। ১৬ বছর বয়সে তাঁর বিয়ে হয় সদাশিব কাদুর সঙ্গে। সদাশিব মুম্বইয়ের একটি স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার একটি ব্রাঞ্চে বই বাঁধায়েই কাজ করতেন। সদাশিবের সঙ্গে মুম্বইয়েই থাকতেন প্রতীক্ষা। প্রথম সন্তানের জন্মের পর তাঁরা ঠিক করেন, গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ঠাকুরের আশীর্বাদ নেবেন। সেই গ্রামে যাওয়ার পথেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সদাশিবের। মাত্র ২০ বছর বয়সেই বিধবা হন প্রতীক্ষা। কোলের ছেলে নিয়ে দেশের বাণিজ্যনগরীতে তিনি তখন একা।

স্বামীর মৃত্যুর পর সংসার চালানোর জন্য কাজ খোঁজা শুরু করেন প্রতীক্ষা। ব্যাঙ্কে স্বামীর পাওয়া টাকা আনতে গিয়ে তাঁকে কাজ দেওয়ার অনুরোধও করেন। কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল না তাঁর। স্কুলের গণ্ডিও পেরোননি। তাই ব্যাঙ্কের চুক্তিভিত্তিক ঝাড়ুদারের কাজ পান তিনি। সকাল-সন্ধ্যা ব্রাঞ্চে ঝাড়ু দেওয়া কাজ ছিল তাঁর। সেই কাজ করেই ছেলেকে বড় করছিলেন তিনি। এ নিয়ে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, “যথন ঝাড়ু দিতে যেতাম, দেখতাম সবাই অফিসে কাজ করতাম। আমি জানতাম আমি ওই কাজের যোগ্য নই। কিন্তু তাঁদের মতোই এক জন হতে চাইতাম আমি।” সে জন্যই ফের পড়াশোনা করার কথা ভাবতে থাকেন তিনি।

ওই ব্যাঙ্কেরই কয়েক জনের থেকে প্রতীক্ষা জানতে চান কী ভাবে ফের পড়াশোনা করতে পারবেন তিনি। তাঁরাও সাহায্য করেন। আত্মীয়রা বইও জোগাড় করে দিয়েছিলেন। এর পরই দশম শ্রেণির গণ্ডি পার করেন তিনি। ৬০ শতাংশ নম্বর পান। কিন্তু দশম শ্রেণি পাশ করে তো আর ব্যাঙ্কে চাকরি পাওয়া সম্ভব নয়। তাই মুম্বইয়ের ভিকরোলির রাতের কলেজে ভর্তি হন তিনি। দিনে কাজ, রাতে কলেজ। এ ভাবে দ্বাদশ শ্রেণিও পাশ করে। ১৯৯৫ সালে সাইকোলজিতে স্নাতক হন তিনি।

তার পর স্টেট ব্যাঙ্কে ক্লার্কের চাকরি পেয়েছিলেন। এর পর ওই ব্যাঙ্কেরই এক কর্মী প্রমোদ তোন্ডওয়ালকারকে বিয়ে করেন তিনি। প্রমোদ প্রতীক্ষার জীবনযুদ্ধকে খুব সম্মান করতেন। এবং নানা ভাবে তাঁকে সাহায্য করতে থাকেন। এর পর ধীরে ধীরে প্রমোশন পান প্রতীক্ষা। ২০০৪ সালে তিনি ট্রেনি অফিসার হন। ধীরে ধীরে প্রমোশন পেয়ে সম্প্রতি ওই ব্রাঞ্চেরই অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার হয়েছেন। ২ বছর পর অবসর নেবেন প্রতীক্ষা। ঝাড়ুদার থেকে অ্যাসিট্যান্ট ম্যানেজার হওয়ার তাঁর এই লড়াই কুর্ণিশ আদায় করে নিয়েছে ব্যাঙ্কের সহকর্মী থেকে এলাকার লোকেদের। হাল না ছাড়া মনোভাব মানুষকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে তার জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ হলেন প্রতীক্ষা।

Next Article