V Senthil Balaji: মুখ্যমন্ত্রী জানেন না, মন্ত্রীকে সরালেন রাজ্যপাল! গভীর রাতে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার
Tamil Nadu Governor vs Government: মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও শলা-পরামর্শ না করেই মন্ত্রীকে মন্ত্রী পরিষদ থেকে সরিয়ে দিলেন রাজ্যপাল। পরে কেন্দ্রের পরামর্শে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করলেন। রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘর্ষ নতুন মাত্রা নিল তামিলনাড়ুতে।
চেন্নাই: অবিজেপি দল শাসিত রাজ্যগুলিতে, রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘর্ষ এক নতুন মাত্রা নিল তামিলনাড়ুতে। বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) রাতে, মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিনের সঙ্গে কোনওরকম পরামর্শ না করেই রাজ্যের মন্ত্রী ভি সেন্থিল বালাজিকে মন্ত্রী পরিষদ থেকে বরখাস্ত করার ঘোষণা করলেন রাজ্যপাল আরএন রবি। সপ্তাহ দুয়েক আগে, রাজ্যের পরিবহণ বিভাগে অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগে সেন্থিল বালাজিকে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। চেন্নাইয়ের এক আদালত বুধবার তাঁর বিচার বিভাগীয় হেফাজতের মেয়াদ ১২ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছিল। তারপরই, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন রাজ্যপাল। তবে সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রের পরামর্শে, ওই আদেশ ফিরিয়ে নিয়েছেন রাজ্যপাল আরএন রবি।
বৃহস্পতিবার রাতে, প্রথমে এক রাজ্যপালের কার্যালয় থেকে সেন্থিল বালাজিকে অপসারণ করার বিষয়ে একটি সরকারি বিবৃতি জারি করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, “নগদ অর্থের বিনিময়ে চাকরির দেওয়া এবং আর্থিক নয়ছয়-সহ দুর্নীতির বেশ কয়েকটি অভিযোগে গুরুতর ফৌজদারি মামলা হয়েছে বালাজির বিরুদ্ধে। তাই তাঁকে মন্ত্রি পরিষদ থেকে অপসারণ করা হল।” পরে গভীর রাতে, রাজ্যপালের কার্যালয়ের এক সূত্র জানায়, এই বিষয়ে রাজ্যপাল আরএন রবি অ্যাটর্নি জেনারেলের পরামর্শ নিয়েছেন এবং বালাজিকে অপসারণের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। আপাতত মন্ত্রী পদেই থাকছেন সেন্থিল বালাজি। প্রসঙ্গত, ইডি তাঁকে গ্রেফতার করার পরও মুখ্যমন্ত্রী স্তালিন বালাজিকে পোর্টফোলিওহীন মন্ত্রী হিসেবে রেখে দিয়েছেন।
রাজ্যপাল তাঁর এই একতরফা সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখায়, আপাতত তামিল ভূমে রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘর্ষের এই পর্বের জল বেশি দূর গড়াবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। না-হলে রাজ্যপালের মূল আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার পরিকল্পনা করেছিল তামিলনাড়ু সরকার। মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন জানিয়েছিলেন, কোনও মন্ত্রীকে বরখাস্ত করার অধিকার রাজ্যপালের নেই। তাঁর সরকার এই বিষয়ে আইনি পথে এগোবে। ডিএমকে নেতা এ সর্বানন সরাসরি সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, বালাজিকে রাজ্যের মন্ত্রী পরিষদ থেকে বরখাস্ত করার যে আদেশ রাজ্যপাল দিয়েছেন, তার কোনও মূল্য নেই। তিনি বলেন, “রাজ্যপাল নিজেকে কী মনে করছেন? তাঁর কি সেন্থিল বালাজিকে বরখাস্ত করার সাংবিধানিক এক্তিয়ার আছে?”
তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের পদে আরএন রবি আসীন হওয়ার পর থেকেই, ডিএমকে সরকার এবং রাজ্যপালের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। গত কয়েক মাসে উত্তেজনা ক্রমে বেড়েছে। বেশ কয়েকটি বিষয়ে দুই পক্ষের মতবিরোধ দেখা গিয়েছে। রাজ্য বিধানসভা পাস হওয়া বেশ কয়েকটি বিলে সম্মতি দেননি রাজ্যপাল। বিলগুলি ফেলে রেখে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রাজ্য সরকারের। এমনকি গত বছর, রাজ্যপাল আরএন রবির অসাংবিধানিক আচরণ করছেন বলে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে অভিযোগও জানিয়েছিল স্টালিন সরকার। সরকার বলেছিল, কোনও রাজ্যপাল যদি রাজনৈতিক সক্রিয়তা দেখান, তাহলে তাঁকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। বিশেষ করে তিনি যখন কোনও নির্বাচিত রাজ্য সরকারের বিরোধিতা করেন, সেটা সংবিধান লঙ্ঘনের সমান। তবে শুধু তামিলনাড়ুতে নয়, পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা, কেরল, দিল্লি – একের পর এক অবিজেপি দল শাসিত রাজ্যে একই ধরনের রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।