AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Ram Janmabhoomi Judgment: রাম জন্মভূমির রায় এখনও চর্চার রসদ

Andhra Pradesh Governor: ২০১৯ সালে যে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে জানিয়েছিল, অযোধ্যায় ২.৭৭ একর জমি রাম মন্দির নির্মাণের জন্য হস্তান্তর করা হবে, সেই বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি নাজিরও।

Ram Janmabhoomi Judgment: রাম জন্মভূমির রায় এখনও চর্চার রসদ
অযোধ্যার রাম মন্দির
| Edited By: | Updated on: Feb 14, 2023 | 6:14 PM
Share

সান্যা তলোয়ার

সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এস আব্দুল নাজিরকে অন্ধ্রপ্রদেশের নতুন রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। গত ১২ ফেব্রুয়ারি অন্ধ্র প্রদেশের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। রাজ্যপালের নিয়োগের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত কোনও ত্রুটি না থাকলেও, কিছু মানুষ অবিরাম সমালোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিতর্ক তৈরি করার জন্য পরিচিত কিছু মানুষ এই নিয়োগ নিয়ে টানা সমালোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন, যা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। আর এই সমালোচনা সরকারের সঙ্গে সমস্যা নিয়ে নয়, বরং এই সমালোচনার উৎপত্তি অযোধ্যার রামমন্দিরকে কেন্দ্র করে।

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এস আব্দুল নাজিরের বিচার ব্যবস্থায় ভূমিকা প্রশ্নাতীত। তিনিই তাঁর পরিবারের প্রথম কোনও ব্যক্তি, যিনি আইনের পেশায় এসেছেন। বংশে প্রথম প্রজন্মের একজন আইনজীবী হিসেবে দেশের শীর্ষ আদালতে পৌঁছানো ইতিহাসে প্রথমবার না হলেও, এটি সত্যিই একটি বড় কৃতিত্ব। তাঁর সময়ে পুট্টস্বামী রায় একটি যুগান্তকারী রায় হিসেবে উঠে এসেছে। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে তুলে ধরেছিলেন তিনি। তিন তালাক মামলাতেও ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন তিনি। এই দুটি রায়ই ২০১৭ সালে পাশ হয়েছিল।

এরপর ২০১৯ সালে যে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে জানিয়েছিল, অযোধ্যায় ২.৭৭ একর জমি রাম মন্দির নির্মাণের জন্য হস্তান্তর করা হবে, সেই বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি নাজিরও। আর সেই কারণেই একাংশের মানুষ সমালোচনা শুরু করেছে। তাই তারা চিৎকার করে যাচ্ছে ‘গণতন্ত্রের মৃত্যু’ হয়েছে বলে। দুর্ভাগ্যের বিষয় এটাই যে, যখন একটি গঠনমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে সংবিধানের গঠনগত কোনও সংশোধনের সুযোগ রয়েছে,তখন তা না করে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির বিরুদ্ধেই সুর চড়ানো হচ্ছে।

গত সপ্তাহে সংসদে যে ধরনের আলোচনা হয়েছে, তা ইতিমধ্যেই দেখেছে গোটা দেশ। উল্লেখযোগ্যভাবে, একজন তৃণমূল সাংসদ, যিনি সংসদে অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করেছেন, তিনি রাম জন্মভূমি মামলার রায় দেওয়া বেঞ্চের অংশ হওয়ার কারণে একটি রাজ্যের রাজ্যপাল হিসাবে এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নিয়োগকে “লজ্জাজনক” হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন। চার বছর আগে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ যে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল, তাতে লাখ লাখ মানুষের বিশ্বাসকে তুলে ধরা হয়েছিল। যাঁরা বছরের পর বছর ধরে এটিকে বাধা দিচ্ছিল, বিভ্রান্ত করছিল, তাঁদের জন্য এটি সত্যিই বিরক্তিকর বটে। এদিকে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের বিষয়ে ১৯৮৩ সালে সরকারিয়া কমিশনের সুপারিশ ও রাজ্যগুলির রাজ্যপাল নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলি নিয়ে বিরোধীরা বা সমালোচকরা কখনোই কোনও আলোচনায় যায়নি।

আরও একটি মজার বিষয় হল, ডক্টর বি আর আম্বেদকর সংবিধানের ১ নম্বর অনুচ্ছেদে ‘ফেডারেশন’ এর বদলে ‘ইউনিয়ন’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। ১৯৪৭ সালের ২১ অগস্ট ইউনিয়ন পাওয়ার্স কমিটির দ্বিতীয় রিপোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, “এখন দেশভাগের মীমাংসা যখন হয়ে গিয়েছে, আমরা সর্বসম্মতভাবে মনে করি যে একটি দুর্বল কেন্দ্রীয় কর্তৃত্ব থাকলে, তা দেশের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হবে। সেক্ষেত্রে তা দেশে শান্তি বজায় রাখতে , সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলি মেটাতে এবং আন্তর্জাতিক মহলেল দেশের পক্ষে কার্যকরভাবে কথা বলতে ব্যর্থ হবে।”  অতএব, যদি সমস্যাটি নিয়োগের বিষয়ে হয়, তবে সমালোচনা কি সেই পরিকাঠামো নিয়ে হওয়া উচিত নয়? বিশেষ করে যেহেতু অতীতে অনেক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকেই বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।

অযোধ্যায় রাম মন্দিরের যে নির্মাণকাজ চলছে, তা নিয়ে মানুষের মনে কীরকম প্রভাব পড়েছে তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ রয়েছে। তবে যিনি সরাসরি এই রায়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁকে একটি সাংবিধানিক পদে নিয়োগের বিরুদ্ধে এই সমালোচনা কাম্য নয়। দুর্ভাগ্যবশত, আবারও, রামমন্দিরকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা পূরণ ও তুষ্টিকরণের রাজনীতির পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।